images

অভিবাসন

ভারতের এই দ্বীপে যেতে দেশটির বাসিন্দাদেরই অনুমতি লাগে

অভিবাসন ডেস্ক

১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম

ভারতের সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ লক্ষদ্বীপ। এই দ্বীপটিতে ভ্রমণে যেতে হলে দেশটির বাসিন্দাদেরই সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। অনিন্দ সুন্দর ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা দ্বীপটি সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত। 

মালয়ালম এবং সংস্কৃততে লক্ষদ্বীপ কথার অর্থ লক্ষ দ্বীপের সমন্বয়। এই দ্বীপপুঞ্জ পশ্চিমে আরব সাগর এবং পূর্বে লক্ষদ্বীপ সাগরের মধ্যে সামুদ্রিক সীমানা হিসেবে কাজ করে।

আরও পড়ুন: রাত তিনটায় সকালের নাশতা খান এই গ্রামের মানুষ

লক্ষদ্বীপ ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হয়েছে ৩৬টি আলাদা আলাদা দ্বীপ নিয়ে। মোট আয়তন ৩২ বর্গ কিলোমিটার।

island-6

এত দিন এই দ্বীপ সম্পর্কে অনেকেই জানতেন না। তাই খুব বেশি পর্যটক সেখানে যেতে পারেননি। সম্প্রতি দ্বীপটি আলোচনায় এসেছে। 

ভারতের মালাবার উপকূল থেকে প্রায় ৪৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেই দ্বীপপুঞ্জেই এখন নজর দেশবাসীর। 

ঝিকিমিকি লেগুন, সাদা বালির সৈকত এবং প্রচুর প্রবাল— লক্ষদ্বীপে। লক্ষদ্বীপের পুরনো সৈকতগুলো সাদা বালি এবং স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ পানির জন্য বিখ্যাত।

islan-4

ভারতের পর্যটন বিভাগের সরকারি ওয়েবসাইট অনুযায়ী, দ্বীপপুঞ্জে যাওয়ার আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। তবেই সেখানে যাওয়ার অনুমতি মেলে।

লক্ষদ্বীপের দ্বীপগুলোতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বহু আদিবাসী উপজাতিদের বাস। তাদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার কথা মাথায় রেখেই সব দ্বীপে পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না।

লক্ষদ্বীপে প্রবেশের অনুমতিপত্রের ফর্ম অনলাইনে পাওয়া যায়। সেই ফর্ম জমা দিতে হয় প্রশাসনের কাছে। সেই ফর্ম খতিয়ে দেখে প্রবেশের জন্য সবুজ সংকেত দেওয়া হয়।

লক্ষদ্বীপে প্রবেশের অনুমতি পাঠানো হয় ই-মেইল মারফত। কোন পর্যটক কয়দিন দ্বীপপুঞ্জে কাটাবেন এবং তিনি কোন দেশের বাসিন্দা, তার উপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট প্রবেশমূল্যও নেওয়া হয়।

প্রবেশের অনুমতি পাওয়ার পরেই হোটেল এবং বিমানের টিকিট বুক করতে পারেন পর্যটকেরা। লক্ষদ্বীপে সাধারণত ৩০ দিনের বেশি থাকার অনুমতি দেওয়া হয় না।

island1

লক্ষদ্বীপ ৩৬টি দ্বীপের সমন্বয়ে তৈরি হলেও এর মধ্যে কাভারত্তি, আগত্তি, বাঙ্গারাম, কদমত এবং মিনিকয়—এই পাঁচটি দ্বীপেই ভ্রমণ করার অনুমতি রয়েছে পর্যটকদের।

এর মধ্যে জলক্রীড়াপ্রেমীদের পর্যটকদের পছন্দের জায়গা আগত্তি দ্বীপ। বিভিন্ন ধরনের জলক্রীড়ার আয়োজন রয়েছে সেই দ্বীপে। মিনিকয় আবার ঐতিহ্যবাহী নৃত্য—‘লাভা’র জন্য বিখ্যাত। উৎসব-অনুষ্ঠানে সেই নৃত্য পরিবেশিত হয়।

মিনিকয়ে ‘জাহাধনি’ নামে বিভিন্ন রঙিন নৌকার একটি প্রতিযোগিতা হয়। যা পর্যটকের কাছে বিশেষ আকর্ষণের। মিনিকয় দ্বীপ টুনা মাছের জন্যও বিখ্যাত। ঔপনিবেশিক ভারতে ১৮৮৫ সালে ব্রিটিশরা লক্ষদ্বীপে একটি টুনা মাছ প্রক্রিয়াকরণের কারখানা তৈরি করেছিল।

island-2

কদমত দ্বীপ পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে। আবার কাভারত্তি পরিচিত ঝলমলে বাজারহাটের কারণে। বাঙ্গারাম পর্যটক টানে প্রবালপ্রাচীর এবং বিভিন্ন ধরনের মাছের সম্ভারের কারণে।

লক্ষদ্বীপের অধিকাংশ মানুষ মালায়লম ভাষায় কথা বলেন। মিনিকয় দ্বীপে কথা বলা হয় মাহি বা মাহল ভাষায়, যার সঙ্গে পুরনো সিংহলী ভাষার মিল রয়েছে। তবে কেউ কেউ হিন্দিতেও কথা বলেন।

island-3

লক্ষদ্বীপের জনসংখ্যার সিংহভাগই থাকে আন্দ্রোট, কাভারত্তি, মিনিকয় এবং আমিনি দ্বীপে।

লক্ষদ্বীপে গেলে যে পদ খেতেই হবে, তা হল মুস কাবাব। সুগন্ধি চালের উপর টুনা মাছ, সবজি এবং মশলার স্তর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পরে মুখবন্ধ পাত্রে রান্না করা হয়। এ ছাড়াও বিরিয়ানি, কদালাক্কা এবং টুনা কারি সেখানকার জনপ্রিয় খাবার। লক্ষদ্বীপের দ্বীপগুলো বিভিন্ন অচেনা ফলেরও ভান্ডার।

তথ্যসূত্র: এবিপি

এজেড