নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৯ এএম
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। জ্বরে কাতরাচ্ছে মানুষ। চিকিৎসা নিয়ে ফিরলেও কমছে না গিরায় গিরায় ব্যথা। শরীর ফুলে যাওয়া আর অজানা দুর্বলতায় দিন কাটাচ্ছেন আক্রান্তরা। তাতে হারিয়ে যাচ্ছে কর্মক্ষমতা। ফলে দিনমজুর, রিকশাচালক ও দোকানদারদের আয় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু কর্নারে চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। হাসপাতালের বেড়ে শুয়ে থাকা ডেঙ্গু রোগী আবছার উদ্দিন বলেন, ‘ভাই! ডেঙ্গুতে জীবন শেষ। মরে বেঁচে থাকা। ১১ দিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। রক্তের প্লাটিলেট এই কমে এই বাড়ে। যেন মৃত্যু হাতছানি দিয়ে ডাকছে।’ একই কথা বলেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী মনছুর আলী, নাদের হোসেন, ফয়জুল কবিরসহ অনেকে।
গত ২৪ অক্টোবর শুক্রবার নগরীর কদম মোবারক জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে কথা হয় নগরীর সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. ইসমাইলের সাথে। খুড়িয়ে খুড়িয়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন তিনি। জানতে চাইলে ইসমাইল (৫৫) বলেন, ‘আমি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। চিকিৎসা নিয়ে ফিরলেও গিরায় গিরায় ব্যথা। ফুলা হাত-পা। নড়াচড়া করতে পারি না। অনেক কষ্টে জুমার নামাজ আদায় করতে এসেছি।’
ইসমাইল বলেন, ‘আমার মতো এলাকার ঘরে ঘরে মানুষ জ্বরে ভুগছে। উপসর্গ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করলেই মিলছে ডেঙ্গু, নয়ত চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের অস্তিত্ব। চিকিৎসা নিয়েও কেউ পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছে না। তাই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ে আমরা আতঙ্কিত।’
কখন ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন, তা নিয়ে আতঙ্কে আছেন হামজারবাগ এলাকার গৃহিণী শিরীণ আক্তার। এই গৃহিণীর বেশি চিন্তা তার দেড় বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে। কয়েল জ্বালিয়ে, মশারি টানিয়ে মশার কামড় থেকে রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।
তবে সব চেষ্টা করেও রক্ষা হয়নি নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষিকা ইশরাত জাহানের। মশার কামড়ে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তিনি ও তার স্বামী। তীব্র ব্যথার যন্ত্রণা নিয়ে দিন পার করতে হয়েছে দুজনকে। স্বামী সেরে উঠলেও পুরোপুরি সুস্থ হননি ইশরাত জাহান। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকের কাছে ছুটতে হচ্ছে তাকে।
নগরীর সেন্টপ্লাসিড স্কুলের শিক্ষক জয়শ্রী জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে তীব্র জ্বরে ভুগছেন তিনি। চিকুনগুনিয়ায় ভোগার চতুর্থ সপ্তাহে এখনো জ্বর আসে, হাতে-পায়ের জয়েন্ট জয়েন্টে তীব্র ব্যথায় ভুগছেন তিনি। ১৫ দিন বাসায় রেস্ট নেওয়ার পর স্কুলে যোগদান করেছেন। দুই সন্তানসহ বাসার পাঁচ সদস্যের প্রত্যেকেই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি জানান, প্রথমে ডেঙ্গু টেস্ট করিয়ে তা শনাক্ত না হওয়ায় কয়েক দিন পর উপসর্গ দেখে চিকিৎসকরা চিকুনগুনিয়ার টেস্ট করালে সেটি পজিটিভ রেজাল্ট আসে। জ্বরের সাথে সাথে হাত-পা ফুলে গিয়েছিল, পানিও এসেছিল। তীব্র ব্যথায় আমি সারাদিন কান্না করতাম। মুখে স্বাদ পেতাম না, সব তিতা। এখনো অনেক ব্যথা, হাতে-পায়ের চামড়াও উঠছে। তীব্র ব্যথা হলেও চিকিৎসকরা শুধু নাপা ছাড়া আর কোনো ওষুধ দেননি।
তাদের মতে, সিটি করপোরেশনের অন্যতম কাজই হচ্ছে মশা মারা। এ কাজে করপোরেশনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখছেন না তারা। সিটি করপোরেশন যদি ঠিকভাবে মশা মারার কাজ করত, তাহলে এই পরিস্থিতি হতো না বলে দাবি তাদের।
চিকিৎসকদের মতে- বাংলাদেশে চলতি বছরের জুন থেকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এডিস মশাবাহিত এই দুই রোগেরই উপসর্গ প্রায় একই রকম। এ কারণে অনেক রোগীরই প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গুর টেস্ট করানো হয়, কিন্তু এর ফল নেগেটিভ আসে। পরে আবারও টেস্ট করিয়ে চিকুনগুনিয়া রোগ শনাক্ত হচ্ছে। একই মশাবাহিত এই দুই রোগের উপসর্গ এক হলেও বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পার্থক্যগুলো হলো-শরীরে র্যাশ অথবা গুটি হওয়া। ডেঙ্গু রোগের ক্ষেত্রে এটি বহুলভাবে দেখা গেলেও চিকুনগুনিয়ার ক্ষেত্রে র্যাশ হতে তেমন দেখা যায় না। এই রোগে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া বা রক্তক্ষরণ হয় না, যা ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে হয়। ডেঙ্গুর মতো রোগী শক সিনড্রোমে চলে গেলেও চিকুনগুনিয়ায় মৃত্যুঝুঁকি একদমই নেই। অনেক সময় চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর স্কিন বা চামড়ায়ও প্রভাব পড়ে।
অনেকের গায়ের রং কালো হয়ে যায়, চামড়া উঠে। ডেঙ্গুতে র্যাশ হলেও শরীরের চামড়া কালো হয়ে যায় না। এই রোগে মৃত্যুঝুঁকি না থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে ভুগতে হয় আক্রান্ত রোগীকে। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, হার্ট বা কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। খাবারে অনীহা এই রোগের রোগীদেরও রয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া মশাবাহিত রোগ। এ রোগ থেকে বাঁচতে হলে মশা মারতে হবে এবং মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে। তবে নগরীর বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডেঙ্গু রোগ বহুগুণ বাড়লেও ওষুধ ছিটাতে দেখা যায় না সিটি করপোরেশনের কর্মীদের। এদিকে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে দিনের পর দিন বিভিন্ন স্থানে জমে থাকছে পানি। এতে বাড়ছে মশার প্রজনন। এমন পরিস্থিতিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন সঙ্গীত আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মুনতাসির উদ্দিন রাফি জানান, এ এলাকায় গত তিন মাসের মধ্যে একদিনও মশার ওষুধ ছিটাতে সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মীকে দেখা যায়নি। অথচ এ এলাকায় মশার উৎপাত বেড়েছে বহু গুণ। ওষুধ ছিটানো নিয়ে পর্যাপ্ত তদারকি না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
একই অভিযোগ নগরীর বহদ্দারহাট ফরিদারপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের। মাঈন উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি জানান, খাল-নালার পাড়ে এলাকাটি হওয়ার কারণে মশার উৎপাত অনেকটাই বেশি। তবে সিটি করপোরেশনের লোকজনকে মাসে একবারও ওষুধ ছিটাতে দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে মশাবাহিত রোগ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সিটি করপোরেশন। এতে এ বছরের পরিস্থিতি ২০২৩ সালের রেকর্ডও ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাই বাড়িঘর ও আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পানির পাত্র ও টায়ার ফেলে রাখা বন্ধ করা এবং নিয়মিত ফগিং কার্যক্রম জোরদারের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুর রব ঢাকা মেইলকে বলেন, জুলাই থেকে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার ঊর্ধ্বগতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম যথেষ্ট কার্যকর হয়নি। বিশেষ করে বর্ষার শুরুতেই যদি মশা নিয়ন্ত্রণে আনা যেত, এ পরিস্থিতি কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হতো।
এই চিকিৎসক বলেন, টানা বৃষ্টিপাত, অপর্যাপ্ত ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম এবং আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশে এডিস মশার প্রজনন বেড়ে যাওয়াই সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এখনই জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সামনে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে।
এদিকে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতায় জোর দিয়ে চলছে দুই সংস্থা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রচারপত্র বিতরণসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এই প্রচারপত্রে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার রাখা, জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াসহ নানা সচেতনতামূলক বার্তা রয়েছে।
এছাড়া সিটি করপোরেশন জনসচেতনতা বাড়াতে এলাকাভিত্তিক প্রচারণা শুরু করেছে। নির্মাণাধীন ভবন, পরিত্যক্ত অবকাঠামো বা পণ্য এবং পানি জমে থাকে এমন সরঞ্জাম অপসারণে এনফোর্সমেন্ট অভিযানও শুরু করবে বলে করপোরেশন সূত্র জানায়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান মেয়র শাহাদাত হোসেন।
সিটি করপোরেশন নগরের আলকরণে সদরঘাট জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমাম হোসেন বলেন, ডেঙ্গু আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। এছাড়া বিনামূল্যে এনএস ১ অর্থাৎ ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া কোভিড-১৯ এর অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও করপোরেশনের জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে করা হয়েছে।
ইমাম হোসেন বলেন, নগরবাসীর দুশ্চিন্তা কমাতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ ও মশকনিধনে গত ২৮ জুন ১০০ দিনের ক্রাশ কর্মসূচি শুরু করে সিটি করপোরেশন। যে কর্মসূচি এখনো চলমান। এই কার্যক্রমের ফল পাচ্ছেন না নগরবাসী। কেননা, এই কর্মসূচি চলার মধ্যেই বেড়ে চলছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন নিজেই মশকনিধন কর্মসূচির গাফিলতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সিটি করপোরেশনের এক সভায় মেয়র বলেন, অনেক ওয়ার্ডে মশকনিধনের কার্যক্রম এখন অনেকটাই কমে গেছে। আগ্রাবাদে গিয়ে দেখলাম, যতক্ষণ আমি ছিলাম ততক্ষণ স্প্রে করা হয়েছে, পরে কাজ বন্ধ।
অবশ্য বরাবরের মতো নিজেদের গাফিলতি অস্বীকার করেছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তারা। করপোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিয়ম করে এলাকা ভাগ করে রুটিন অনুযায়ী ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। হটস্পষ্টগুলোতে বিশেষ দল কাজ করছে। তারপরও কয়েকটি সংকটের কারণে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের এক কর্মকর্তা এমন পরিস্থিতির জন্য তিন সংকটকে দায়ী করেছেন। তার মতে, চট্টগ্রাম নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে নিবিড়ভাবে মশা মারার ওষুধ ছিটানোর জন্য অন্তত সাড়ে চারশ কর্মী দরকার। কিন্তু আছে আছে ২৭০ জন। তাদের মধ্যে ৭০ জন আবার বিশেষ দলের সদস্য। বাকি ২০০ সদস্য ওয়ার্ড পর্যায়ে কাজ করেন। নগরের ওয়ার্ডগুলোর আয়তনের তুলনায় এই জনবল কম।
আর দুটি সংকট হচ্ছে বাজেট স্বল্পতা এবং পর্যাপ্ত ওষুধের অভাব। মশকনিধন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রতি অর্থবছরে বাজেটে ৮-৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু বাস্তবে বরাদ্দ পাওয়া যায় তিন ভাগের এক ভাগ। ফলে চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ কেনা যায় না। ওই কর্মকর্তার মতে, নগরের সব কটি ওয়ার্ডে ছিটানোর জন্য বছরে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার লিটার অ্যাডাল্টিসাইডের (পূর্ণবয়স্ক মশা মারার ওষুধ) প্রয়োজন। কিন্তু সিটি করপোরেশন কিনে ২৫ থেকে ৩০ হাজার লিটার। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় অর্ধেক। ফলে ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম চলে টেনেটুনে।
২০২১ সালে মশা নিয়ন্ত্রণ ও ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য সিটি করপোরেশন গঠিত গবেষক দলের সদস্য সচিব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ওমর ফারুক ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এবার ডেঙ্গুর সঙ্গে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ খুবই বেড়েছে। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার বিষয়ে চার বছর আগে বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছিলেন। বিশেষ করে গণসচেতনতা, মশকনিধনে প্রযুক্তির ব্যবহার। কিন্তু এগুলোর কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। আগের মতোই চলছে মশকনিধন কার্যক্রম। ফলে পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হচ্ছে না।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবুল ফয়সাল মো. নুরুদ্দিন চৌধুরী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর রক্তে প্লাটিলেট ও হিমোগ্লোবিন কমে গেলে, রক্তক্ষরণ হয়। ফলে রোগীকে অনেক সময় রক্তও দিতে হয়। জ্বরের জন্য সাধারণত প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ এবং ব্যথার জন্য সাধারণত পেইনকিলার দেওয়া হয়ে থাকে। তবে চিকুনগুনিয়াতে এসব সমস্যা হয় না বলে শুধু ব্যথা কমানোর জন্য পেইনকিলার দেওয়া হয়। আবার অনেক সময় চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীকে থেরাপিও দিতে হয়। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।’
এই চিকিৎসক বলেন, ‘দুই রোগের রোগীদেরই প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার ও ফল খেতে দিতে হবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর পরিমাণে পানি, ডাবের পানি, শরবত, জুস, গ্লুকোজ, স্যুপ, দুধ খেতে হয়। অনেক সময় বমির কারণে খাবার খেতে না পারলে তখন স্যালাইনও দেওয়া হয়। তবে চিকুনগুনিয়াতে আক্রান্ত রোগীকে তরল খাবারের পাশাপাশি বিশেষ করে ফল বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।’
আইকে/জেবি