নিজস্ব প্রতিবেদক
০২ জুন ২০২৫, ১২:১৭ পিএম
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টা, ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, সহিংসতা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ জন চিকিৎসক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে আরও ১০ জনকে তিরস্কার ও সতর্ক করা হচ্ছে।
গত বছরের ৪ আগস্ট ক্যাম্পাসে সংঘটিত ঘটনায় এক শিক্ষার্থীকে মারধর, ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে। তদন্তে ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ অনুযায়ী চাকরি থেকে বরখাস্তের সুপারিশ করে কমিটি, যা ৩১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হয়।
চাকরিচ্যুত হতে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের ডা. মো. রিয়াদ সিদ্দিকী, পেইন্টার নিতীশ রায়, ড্রাইভার সুজন বিশ্বশর্মা এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স শবনম নূরানীসহ আরও অনেকে। একই ঘটনায় সরাসরি সংঘর্ষ, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগে জড়িত থাকায় আরও ২৩ চিকিৎসককে শনাক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তারাও চাকরিচ্যুত হচ্ছেন। এই তালিকায় রয়েছেন কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান, নিউরোলজির অধ্যাপক ডা. মো. আহসান হাবিব এবং ক্লিনিক্যাল অনকোলজির অধ্যাপক ডা. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ।
এ ছাড়া অধ্যাপক ডা. এএইচএম জহুরুল হকের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গ করে পদোন্নতির আবেদন করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকেও চাকরি থেকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়েছে। অভিযোগ করেন একই বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাসিমা আখতার।
সিন্ডিকেট সভা চলাকালে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ৯ চিকিৎসক এবং ১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের তিরস্কার ও সতর্ক করা হয়েছে।
সভার আরও কিছু সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে—দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক বৈষম্যের শিকার ২২ জন কর্মচারীকে ভুতাপেক্ষাভাবে সব সুবিধা প্রদান, ৯৬ জনের চাকরি স্থায়ী এবং ২২ জনের পদোন্নতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, যেসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত এখনও চলমান, তাদের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এসএইচ/এইউ