images

হেলথ

সংকটের ছায়ায় দেশে বিশ্ব নার্স দিবস পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ মে ২০২৫, ১১:০৬ এএম

আজ সোমবার (১২ মে) বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে— বিশ্ব নার্স দিবস। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নার্সদের ভূমিকা অপরিসীম হলেও, নানা সংকট ও অব্যবস্থাপনার মধ্যেই উদযাপন করা হচ্ছে দিনটি। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য— ‘আমাদের নার্সরা আমাদের ভবিষ্যৎ : নার্সদের যত্ন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে।’

তবে প্রতিপাদ্যের আলো ছড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন না দেশের নার্সরা। বাস্তবতা বলছে, তারা নিজেরাই আজ যত্নের অভাবে নানাভাবে অবহেলিত।

বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত নার্স আছেন ১ লাখ ৩ হাজার ১৫১ জন। অথচ জনসংখ্যার অনুপাতে প্রয়োজন ৩ লাখেরও বেশি নার্স। অর্থাৎ, দেশের স্বাস্থ্যসেবার বড় অংশ চলছে মাত্র ৩৪ শতাংশ নার্স দিয়ে। ফলে নার্সদের ওপর চাপ বেড়েছে ভয়াবহভাবে। স্বাস্থ্যসেবার মান যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি নার্সদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ছে গুরুতর প্রভাব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, একজন চিকিৎসকের জন্য তিনজন নার্স থাকা দরকার। কিন্তু বাংলাদেশে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে একজন নার্সকে তিনজন চিকিৎসকের সঙ্গেই কাজ করতে হয়। আবার প্রতি পাঁচজন রোগীর জন্য একজন নার্স থাকার কথা থাকলেও, বাস্তবে অনেক সময় একজন নার্সকে সামলাতে হয় ১০০ জন রোগী পর্যন্ত। এর ফলে সেবা দেওয়ার সক্ষমতাও কমে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) তথ্যে দেখা গেছে— বর্তমানে দেশে প্রায় ১ লাখ ৩৪ হাজার চিকিৎসক রয়েছেন। সে অনুযায়ী নার্সের প্রয়োজন ৪ লাখ ২ হাজার। কিন্তু নিবন্ধিত নার্স আছেন মাত্র ১ লাখ ১০ হাজার। অর্থাৎ, প্রায় ২ লাখ ৯২ হাজার নার্সের ঘাটতি রয়েছে।

প্রতিবছর সরকারি ও বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন ৩৬ হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র ১২ হাজারের মতোই নার্স হিসেবে কর্মজীবনে যুক্ত হন।

নার্স দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, র‍্যালি ও কেক কাটাসহ নানা আয়োজন করেছে নার্সদের বিভিন্ন সংগঠন। তবে এসব উৎসবের ভেতরে লুকিয়ে আছে একটি ক্লান্ত শ্রেণির দীর্ঘশ্বাস।

নার্সরা চান— সম্মান, সঠিক জনবল ও ন্যায্য সুযোগ। কারণ, স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা এই পেশাজীবীরা যদি সঠিকভাবে কাজ করতে না পারেন, তাহলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য।

এসএইচ/এইউ