নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১৪ পিএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দৌড়ে সাবেক আমলা-পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা, ক্রীড়া ও বিনোদনসহ বিভিন্ন অঙ্গনের তারকাদের সঙ্গে শমিল হয়েছেন বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। চূড়ান্ত তালিকায় অন্তত ১৩ জন চিকিৎসক স্থান করে নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন বর্তমান সংসদ সদস্য ও সরকারের মন্ত্রী।
রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ জনের দলীয় মনোনয়নের মধ্যে চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ঢাকা-১৯ আসনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। কুমিল্লা-৭ আসনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। সাতক্ষীরা-৩ আসনে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবং সংসদ সদস্য ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক। টাঙ্গাইল-৩ আসনে বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য ডা. কামরুল হাসান খাঁন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল।
কিশোরগঞ্জ- ১ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছোট বোন ও বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর। সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ। যশোর-২ আসনে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. তৌহিদুজ্জামান তুহিন মনোনয়ন পেয়েছেন।
এছাড়া হবিগঞ্জ-১ আসনে ডা. মো. মুশফিক হুসেন চৌধুরী, মেহেরপুর-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর এবং বগুড়া-৭ আসনে ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, নাটোর-৪ আসনে ডা. সিদ্দিকুর রহমান নৌকার মাঝি হয়েছেন।
রাজনীতি ও দেশ পরিচালনায় চিকিৎসকদের অংশগ্রহণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, পেশাজীবীদের এই মূল্যায়নের মাধ্যমে দেশের রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটবে। মেধাবী চিকিৎসকরা রাষ্ট্র পরিচালনায় এলে দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে।
সম্প্রতি ঢাকা মেইলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, আমি মনে করি এটি একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। তারা চিকিৎসা পেশার মাধ্যমে মানুষকে সেবা দিয়েছেন। এখন দেশ সেবায় মানুষের জন্য আরও বৃহত্তর পরিসরে কাজ করতে চান। এটি ইতিবাচক, তাদের মতো মেধাবীরা দেশ পরিচালনায় এলে জাতি উপকৃত হবে। আর তাদের সবাই তো মনোনয়ন পাবেন না। কেউ কেউ পাবেন। রোগী দেখার মাধ্যমে তারা অল্প কিছুসংখ্যক মানুষকে সেবা দিতে পারেন। এর মাধ্যমে তারা আরও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। তারা দেশের জন্য ভালো অবদান রাখতে পারবেন বলেই আমার বিশ্বাস।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-সহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের অন্তত ২৫ জন চিকিৎসক আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য চেষ্টা তদবির করেছিলেন। তদের মধ্যে অনেকে এসব সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতা। মনোনোয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দেশে স্বাস্থ্য শিক্ষার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউর দুই সাবেক উপাচার্য। তারা উভয়ই মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন স্বাচিপ ও বিএমএর শীর্ষ নেতারা।
এমএইচ/জেবি