বিনোদন ডেস্ক
২৭ জুলাই ২০২২, ০৪:৩২ পিএম
বাংলা লোকগানের উজ্জ্বল নক্ষত্র আবদুল আলীমের জন্মদিন আজ। তার জন্ম ১৯৩১ সালের ২৭ জুলাই। কিংবদন্তি এই শিল্পীর জন্মদিনে প্রকাশ করা হলো তার দুর্লভ একটি বেতার সাক্ষাৎকার। তৎকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদপাঠক ও ঘোষক শহীদুল ইসলাম সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন। কথায় কথায় আবদুল আলীম তার জীবনের নানা বিষয়ে মনের আগল খুলেছিলেন। আমার বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামে।
যতদূর সম্ভব যখন নয় কিংবা দশ বছর বয়স, তখন আমার এক চাচা কলকাতা থেকে একটা কলের গান কিনে নিয়ে গেলেন।
কলের গান। তখন তো আমরা গ্রামোফোন বুঝতাম না। কলের গানই বুঝতাম। তা সকালে তখন প্রায় নয়টা বাজে, আমি পান্তাভাত খাচ্ছিলাম বাড়িতে বসে। গ্রামের বাড়িতে তো আমার জন্ম। সেখানে মা পান্তাভাত দিয়েছেন। সেই পান্তাভাত খাচ্ছি। হঠাৎ কানে একটা সুন্দর আওয়াজ আসলো, গানের আওয়াজ। ভাত রেখেই আমি সেই পাশের বাড়িতে গেলাম আমার চাচার বাসায়। সেখানে দেখছি গান হচ্ছে, তখন এদিক-ওদিক তাকাই কোনখানে মানুষ আছে, কিছু বুঝতে পারি না। কী যেন একটা গোল মতন রেকর্ড। মানে ওই এখন যে রেকর্ড দেখি ওই রেকর্ড এখানে ঘুরছে! আমার প্রথম…ওই প্রথম আমি দেখলাম।
যতদূর মনে পড়ে এখন সেই গানটা আমি পরে অনুভব করে শিখে নিয়েছি শেষপর্যন্ত। গানটির কথা হলো—সদা মন চাহে মদিনা যাব।
আমি প্রেরণা পেলাম এবং গান শুনে খুব পাগল হয়ে গেলাম! এই গান শুনে।
এই গানটি রেকর্ড করা ছিল কে. মল্লিকের কণ্ঠে।
চর্চা তখনও আরম্ভ করিনি। আমি কলের গানই শুনতাম। শুনে শুনে কিছু গান আমি শিখলাম।
শেখার পরে তাল এবং লয়, ওই রেকর্ডে যেমন বাজত…ঠিক ওই লয়ও বুঝে গেলাম, তালও বুঝে গেলাম।
শুনে শুনেই। আমার মাথায় ঢুকে গেল ওই জিনিসটা।
তারপরে গ্রামের ভিতরে আমি ওই গান গাইতাম না। আমি গাইতাম মাঠে যেখানে কোনো লোকজন নাই। মানে শরম লাগত আমার খুব।
খুব লজ্জা লাগতো!
তারপর একদিন গ্রামের কতগুলো লোক এসে আমার ভাইকে ধরল যে, আলীমকে তোমরা গান শেখাও। তার গলাটা এত মিষ্টি! তারপর আমার ভাই টাকার লোভ দেখায়, এ দেখায় ও দেখায়…গান গাওয়াইতে চেষ্টা করে; তা আমি শেষপর্যন্ত ভাই-ই টাকা দিলো আমি গান গাইলাম। সে একজন ভদ্রলোক ছিল, গোলাম আলি তার নাম। ভদ্রলোক একটা হারমোনিয়াম নিয়ে আসলো। আমাক গান গাওয়ালো। গাওয়ার পর গান শুনে মানুষ খুব প্রশংসা করতে লাগল। খুব তারিফ করতে লাগলো। তারপর আমার লজ্জা ভেঙে গেল। তখন থেকেই ওই ওস্তাদ ধরলাম ওনাকেই, গোলাম আলী সাহেবকে। উনি আমাকেই গান শেখাতে লাগলেন।
জ্বি।
গ্রামেরই লোক।
আছে। তবে এই গান শোনার পর গ্রামে থিয়েটার হতো। জায়গায় জায়গায় আমাকে নিয়ে যেত, অনেক মেডেল দিত। অনেক, অনেক জায়গায়। সেই মেডেলও পেলাম। খুব আনন্দ পেতাম। তখন উৎসাহ বেড়ে গেল।
ওই আমার ওস্তাদ গোলাম আলী সাহেব আমাকে কলকাতা নিয়ে গেলেন। নিয়ে যাওয়ার পরে গ্রামোফোন কোম্পানিতে একদিন বেড়াতে নিয়ে গেলেন, যে চলো দেখে আসি। তখন ওই কে. মল্লিক সাহেবের দেখা পেলাম।
জ্বি।
তখন নজরুল ইসলাম, উনি ভালো ছিলেন।
পরিচয় সেদিন হলো না। তারপরে একদিন আমি আলিয়া মাদ্রাসা গেলাম, এ.কে ফজলুল হক বাংলার প্রধানমন্ত্রী আসবেন, বক্তৃতা হবে। সেখানে আমার ভাইয়ের সঙ্গে গেলাম। তারপর আমার ভাই গোপনে গোপনে আমার নাম একটা লিস্টে লেখে দিয়ে আসলো যে, এ ছেলে একটা গান গাইবে।
আমি তো ভয়ে গান গাইতে পারছি না। সে কেমন লাগছে, কলকাতার মতন জায়গায় প্রথম গিয়েছি। তারপর যাইহোক আমাকে ডাকল এইবারে গান গাইবে আবদুল আলীম। আমি গান আরম্ভ হওয়ার পরেই দেখি হক সাহেব পেছনে এসে বসেছেন। সেই গানটা আমি গাচ্ছি ‘সদা মন চাহে মদিনা যাব’।
সেই গান শুনে উনি (ফজলুল হক) অঝোর ধারায় কাঁদছেন। তখন বললেন ‘ভাই তুমি আমার সাথে দেখা করে যাবে, তোমাকে আমি পোশাক তৈরি করে দেব’। তখন উনি যেখানেই ফাংশন করতেন কলকাতার মধ্যেই খিদিরপুর, আলিপুর—গাড়ি পাঠিয়ে দিতেন আমার বাসায়। তারপর ভাইকে নিয়ে আমি যেতাম সেখানে, গিয়ে দেখতাম হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী সাহেবও সেখানে। আমার গান শুনে উনি খুব খুশি হলেন এবং পাবলিক আমাকে টাকা দেয়। মটরগাড়িতে চড়ে আসি, আমরা খুব আনন্দ পাই। টাকা নিয়ে এসে বাড়িতে হয়তো এটা-ওটা কিনে খাই, রাস্তাঘাটে তখন ভালো ভালো জিনিস পাওয়া যায়।
তখন বয়স হবে দশ থেকে এগারো।
জ্বি।
তখন আমার গ্রামোফোন রেকর্ড…এক ভদ্রলোক ছিলেন হুগলি বাড়ি এম. সুলতান তার নাম। ঢাকাতেই আছেন বর্তমানে তিনি। বুড়া হয়ে গেছেন। খুব ভালো নামকরা কবি ছিলেন তিনি, লেখক। তিনি আমাকে গ্রামোফোন কোম্পানিতে নিয়ে গেলেন কলকাতায়। বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখি বসে আছেন কাজী নজরুল ইসলাম সাহেব। তিনি হয়তো একটা গান লিখছিলেন, লিখতে লিখতে হয়তো হঠাৎ উনি মানে এম. সুলতান সাহেব বললেন ‘কাজীদা, একটা ছেলেকে নিয়ে এসেছি একটু গান শুনুন’।
আমি যখন বসে আছি তখন উনি বললেন, ‘তুমি গাও’। তখন আমি কাজী সাহেবরই লেখা একটি গান, আব্বাসউদ্দীন সাহেবের রেকর্ড ছিল ‘উঠল তুফান পাপ দরিয়ায়’। এই গানটি গেয়ে শুনালাম, উনি খুব খুশি হলেন। তারপর গ্রামোফোন কোম্পানির ট্রেনার যিনি ছিলেন তাকে বললেন, ‘এই ছেলেটির দুটি গান রেকর্ড করুন’। গান দুটি ছিল—‘তোর মোস্তফাকে দেনা মাগো, সঙ্গে লয়ে যাই, মোদের সাথে মেষচারণে ময়দানে ভয় নাই’, আরেকটি হলো, ‘আফতাব ওই বসল পাটে আঁধার এল ছেয়ে, চল ফিরে চল মা হালিমা আছে রে পথ চেয়ে’।
ছিল কিন্তু রেকর্ডটা ভেঙে ফেলেছি।
এরপরে তো আমি কলকাতায় রেকর্ড করি, তারপর বাড়ি ফিরে যাই। তখন দেশ ভাগ হয়ে গেল। তারপর আমার ভাই দেশে গেলেন এবং বললেন চলো ঢাকা যাই।
মমতাজ আলী খান সাহেব আমাকে তিন-চার বছর গান শেখালেন একাধারে।
তারপর শিখেছি…তবে তার আগেই মরহুম আব্বাসউদ্দীন সাহেব আমার গান শুনলেন সাদেকুর রহমান সাহেবের বাড়িতে, শুনেই বললেন, তোমাকে আমি চাকরি দদেব পাবলিসিটি ডিপার্টমেন্টে।
তো শুনে আমি বললাম, তা দিলে তো খুব উপকার হয়। এখন আমি বেশ অভাবে আছি, কষ্টে আছি। এখন তো রেডিওতে গান গাই দশটা করে টাকা দেয়। সারাদিন গান গেয়ে দশটি করে টাকা দেয়। তখন রেডিও অফিস ছিল নাজিমুদ্দিন রোডে। তারপর চাকরি দিলেন আমাকে। তিন বছর চাকরি করার পরে বললেন যে, তুমি ক্ল্যাসিক্যাল গান শেখো, উচ্চাঙ্গসংগীত শেখো। তখন ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু সাহেব ছিলেন, তার কাছে আমি তিন বছর উচ্চাঙ্গসংগীত চর্চা করলাম। করার পরে তিনি ইন্তেকাল করলেন। তারপর আর শিখলাম না। এই রাগরাগিণী আমি এখনও পর্যন্ত বাড়িতে রেওয়াজ করি।
আমি গাইতাম, সব গানই গাইতাম; রবীন্দ্রসংগীত, নজরুল ইসলামের গানও গাইতাম। ভাটিয়ালি গাইতাম, বাউল গানও গাইতাম। কিন্তু, হঠাৎ এই (পল্লী)গানের সুর যেন আমাকে পাগল করে ফেলল। যখন ঢাকায় প্রথম আসলাম, তখন দেখছি যে মানে শুনছি রেডিওতে মমতাজ আলী সাহেবের একটা গান। সকালে উনি গাচ্ছেন আর তার সঙ্গে বাঁশের বাঁশি বাজছে, সেই গান শুনে আমি দাঁড়িয়ে গেলাম হঠাৎ, রাস্তায়! দাঁড়িয়ে গিয়ে যে আমার এত্ত ভালো লাগল যে আমি এই গানই শিখব আর কোনো গান শিখব না।
ভালো শিল্পী হতে গেলে প্রথমে গলা ভালো হতে হবে। গলা ভালো না হলে তার কিছুই হবে না। প্রথম গলা। তারপর সেই গলাকে তৈরি করতে হলে উচ্চাঙ্গসংগীত শিখতে হবে।
জ্বি, উচ্চাঙ্গ শিখতে হবে এবং তার সুর বুঝতে হবে। এবং সেই রাগরাগিণীর ওপর কিছু রেওয়াজ করতে হবে। ফলে, তার গলার কারুকার্য কিছু তৈরি হয়। যেন তার গায়কী একটু ফ্রি হয়, যেন অসুবিধা বোধ করে না।
তৈরি হচ্ছে না। তবে আমি অনেক চেষ্টা করি, সেরকম গলা হয়তো দু-একটা পাই; কিন্তু কেন যে হচ্ছে না! সেটা আমার যেন মনে হয়, তারা দু-চার মাস গান শেখার পরে হঠাৎ একটা বিদেশি সংগীত কানে আসলে, এটাকে যেন অবহেলা করে সেই দিকে চলল তারা।
এবং তারা বলে যে, পল্লীগীতি তো একই সুর। এ শেখা হয়ে গেছে, আর কী শিখব!
একইরকম সুর না। এইটা আমি বলতে গেলে—এর সুর বোধহয় হাজার রকমের আছে!
হ্যাঁ, কিন্তু সেই সুর আমরা গাইতে চেষ্টা করিনি। একইরকম সুরে ফেলে কোনোরকম চালাই। কিন্তু আমার মনে হয়, সেই সুর যদি ঠিক পরিষ্কারভাবে তুলি আমরা, গানের নিশ্চয়ই সেই নতুনত্ব, একেক গানের পর আরেক গান। নিশ্চয়ই একঘেয়েমো লাগবে না।
এখন আমাদের সকলেরই চেষ্টা করা দরকার যে, দেশের যেসব সম্পদ পড়ে আছে, এগুলো সব সংগ্রহ করে রাখা আমাদের একটা নিজস্ব জায়াগায়। যেমন, রেডিও অফিস আছে এইখানে। এবং যেইসব শিল্পী গ্রামে পড়ে আছে। ভালো ভালো গলা, তারা ভালো ভালো গানও জানে, ভালো ভালো লিখতেও জানে—তাদের একটা বিহিত করা উচিত। কেননা, মহকুমায়-মহকুমায়, জেলায়-জেলায় যদি একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে, ইশকুল, গান শেখার ইশকুল; সেখানে যদি তাদের নিয়ে এসে গান শেখার ব্যবস্থা করা হয়, যদি আমাদের সরকার করেন, আমার মনে হয় বহু শিল্পীর জন্ম হবে বাংলাদেশে।
রাশিয়া গেছি, চায়না গেছি আর বার্মা গিয়েছিলাম।
ওরা নিজেদের সংস্কৃতি প্রথম ওরা ভালো করে রাখবার সবসময় চেষ্টা করে। ভিনেদেশিটা হয়তো তাদের দেশকে খুশি করবার জন্য কিছুটা শেখে। নিজ দেশের সংগীতটাকে সবসময় শ্রেষ্ঠ স্থানে রাখার জন্য চেষ্টা করে।
না, আমি জানি না। তবে চেষ্টা করলে গাইতে পারতাম। কিন্তু আমি চেষ্টা করিনি। কেননা, আমি গেছি বাংলাদেশের গান গাইতে, বাংলাদেশের গান তুলে ধরেছি যেন বাংলাদেশের গান গেয়ে তাদের খুশি করতে পারি। হয়তো গান গাওয়ার সময় ভাটিয়ালির টান দিছি একটা, ক্ল্যাপস দিতেই থাকল। থামে না।
এখানে বাংলাদেশে রেকর্ড করি ১৯৬০ সালে। কয়েকখানি গান করেছিলাম। তার মধ্যে প্রথম গান ছিল ‘প্রেমের মরা জলে ডুবে না’।
ও…বউয়ের কথা বলছেন?
নাহ, বউ তো আমাকে সবসময় উৎসাহের সঙ্গে বলেছে যে, যাও গ্রামে যাও। গান গাও। গ্রামের লোককেও শোনাবে। তাহলেই তো তুমি দোয়া পাবে, তবেই তো তুমি বড় হবে।
জ্বি, সে দিয়েছে। এবং সে কিছু গান জানত। আমার বউ কিছু গান জানত। যেমন, আমি প্রথম রেকর্ড করি ‘প্রেমের মরা জলে ডুবে না’, আমি বউয়ের কাছ থেকে শিখেছিলাম এই গান। আমার বউ এই গান গেয়ে শোনালো আমায়। আমার খুব ভালো লাগলো হঠাৎ।
সেই-ই গাচ্ছিল হঠাৎ, তো আমি বললাম গানটা লিখে দাও তো। গানটা লিখে নিলাম সম্পূর্ণ, তারপর জায়গায় জায়গায় গাইতে লাগলাম, মানুষ খুব প্রশংসা করতে লাগল। এবং বউ বললো যে, এইটা মারফতি গান, এইটা তুমি গাইবা এবং রেকর্ড করার চেষ্টা করবা।
জ্বি।
আমার চার মেয়ে, তিন ছেলে।
আমি শিখাইনি। তবে আমি যখন বাড়িতে থাকি না তখন তিন-চারজন নিজে নিজেই হারমোনিয়াম বাজিয়ে, নিজে নিজেই গান শুরু করে বাড়িতে। আমি ঘরে ঢোকার সময় শুনতে পাই।
আমার ভালো লাগে খুব ভাটিয়ালি গান। ভাটিয়ালি গান মানে আমাদের দেশ তো নদীমাতৃক দেশ। মাঝিরা যখন সেই ভাটিয়ালি গান গায়, তখন ভাটির গানের সুরটায় আমার অন্তরটা যেন পাগল হয়ে যায়। সেই টান আর সেই সুর, আর যখন পাল তুলে যায় সেই গান গাইতে গাইতে আমার নিজেকে খুব ভালো লাগে। সেইজন্য ভাটিয়ালি গান আমার সবচেয়ে বেশি মধুর লাগে।
সিলেট লাইনে এক গ্রামে গান গাইতে গেছিলাম, সেখানে হয়তো আমার নাম শুনে বহু লোক এসেছে। যে জায়গাটা ঘেরাও করে টিকেট সেল করেছে; গান-বাজনা হবে, হয়তো সেই জায়গাটা ভরে গেছে। এবং বাইরেও দুই-তিনহাজার লোক দাঁড়িয়ে আছে টাকা নিয়ে, টিকেট চাচ্ছে কিন্তু দিচ্ছে না। জায়গা নাই, কোথায় বসাব। এই নিয়ে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তো আমি প্রথম গানটা শুরু করেছি ‘রূপালি নদী রে’। তখন বাইরের লোকগুলা সব বাউন্ডারি, বেড়া ভেঙে মারপিট শুরু করে দিলো। কেন জায়গা দেওয়া হবে না? টিকেট দেবে না কেন, আমরা তো টাকা নিয়ে এসছি! এই দেখে-শুনে হয়তো আমি সেখান থেকে হারমোনিয়াম ছেড়েটেড়ে দৌড়!
সব ফেলে থুয়ে পলাইছি! কে চিনবে আবদুল আলীম! কার মাথায় কোন লাঠি কীভাবে পড়ে যায়, আমার মাথায় দু-একটা পড়ে যেতে পারে!
এরপর গান রেকর্ড করলাম…তিনি ওস্তাদ বাবু কানাইলাল শীল। তিনি আমাকে চার-পাঁচ বছর গান শিখিয়েছিলেন। তার গানের আবার ভাবধারা অন্যরকম। আলাদা। এবং তার ভাবধারায় আমি যেন আরও বেশি নাম করলাম এই বাংলাদেশে!
জ্বি।
গানটা ছিল ভাটি গাঙের ভাইটাল সুরে।
সেটা হলো, এই বাংলাদেশে গানের কথা ও সুর। তার সঙ্গে একেবারে মিশে যেতে হবে।
আমাদের খ্যাতনামা গায়ক আবদুল লতিফ সাহেব, তিনি আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তার কথা ভোলার নয়। তিনি যথেষ্ট উপকার করেছেন আমার। এবং ভালো পরামর্শ দিয়েছেন এই পল্লীগান সম্বন্ধে। তার একটি গান আছে, ‘ও পদ্মা নদী রে…’।
আরএসও