বিনোদন ডেস্ক
২২ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৩ পিএম
বছর দুয়েক আগে মিরপুরে একটি শুটিংবাড়িতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। ওই বিস্ফোরণে গুরুতর দগ্ধ হন অভিনেত্রী। হাত, পা, চুলসহ শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে যায়। বাঁচার সম্ভবনা খুব একটা নেই বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন তখন।
তবে মাস দুয়েক জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে আঁখি সুস্থ হওয়া শুরু করেন। তারপর থেকে বাসায় চিকিৎসা নিয়ে একটু একটু করে সেরে উঠছেন তিনি। গতকাল সোমবারের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ঝলসে গেছে অসংখ্য মানুষের শরীর। যা দেখে শরীর পোড়ার যন্ত্রণার কথা মনে পড়েছে অভিনেত্রীর। সামাজিক মাধ্যমে বর্ণনা করলেন নিজের সেই অভিজ্ঞতার।
আজ মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে শারমিন আঁখি লিখেছেন, ‘আগামী এক সপ্তাহ বাচ্চাদের কাছে যত কম ভিজিটর যাওয়া যায় ততই মঙ্গল। প্রচুর ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে এই সময়টা। আগুনে পোড়ার পরবর্তী প্রভাব হচ্ছে ইনফেকশন। চিকিৎসাধীন বাচ্চাগুলোকে বাঁচাতে চাইলে প্লিজ আবেগের বশবর্তী হয়ে এই মুহূর্তে তাদেরকে দেখতে যাবেন না।’
এরপর লেখেন, ‘আমাদের চামড়া জার্ম প্রটেক্ট করে। যেখানে চামড়াযই নেই সেখানে প্রটেকশন একদম শূন্য লেভেলে। ইনফেকশনের কারণে বেশিরভাগ রোগী মারা যায়। পোড়ায় মরে না। চামড়ার পোড়ার কষ্টের সাথে অন্য কোনো যন্ত্রণা মেলাতে যাবেন না। ওপরটা পোড়ায় ভেতরটাও পোড়ায়।’
আরও লেখেন, ‘ড্রেসিংয়ের যন্ত্রণা আরও অসহ্যকর। নতুন চামড়া আসলেই সেই চামড়া ঘষে আবার তোলা হয়। ট্রমা শুরু হবে আর দশ দিন পরে। এখন প্রতিটা বাচ্চা অনুভূতি শূন্য। এই মুহূর্তে, একমাত্র ডাক্তার ছাড়া ওদের আশপাশে যত কম যাওয়া যায় ততই ভালো।’
সবশেষে শারমিনের ভাষ্য, ‘বাসায় ফেরার পর প্রত্যেকটা বাচ্চার মনোসামাজিক চিকিৎসা প্রয়োজন। আমি তিন মাস মনোসামাজিক চিকিৎসার শরণাপন্ন হয়েছি। শারীরিক সুস্থতার সাথে মানসিক সুস্থতাটা অনেক জরুরি।’
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ মডেলের একটি বিমান উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তরার মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে। প্রচণ্ড শব্দ আর আগুনের গোলায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্লাস চলাকালীন দুর্ঘটনা ঘটায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় ব্যাপক বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক।
দুর্ঘটনার সময় কলেজে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ ও আগুনে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে, কেউ শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। সবশেষ খবর অনুযায়ী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ এবং চিকিৎসাধীন শতাধিক।