images

বিনোদন

রাফী সিনেমা হলে দর্শক ফিরিয়েছেন, কিন্তু...

বিনোদন ডেস্ক

২৪ জুন ২০২৫, ০১:৩৮ পিএম

বাংলাদেশি সিনেমার যখন গতি থেমে গিয়েছিল, হলে কেবল কোকাকোলা আর পপকর্ন বিক্রি হতো, তখন রায়হান রাফী এসে যেন বললেন, ‘আসুন, আবার সিনেমা দেখি’ তিনি শুধু ছবি বানাচ্ছেন না, দর্শকদের হলে ফেরার একটা উপলক্ষ তৈরি করেছেন।

রাফী এমন একজন নির্মাতা, যিনি জানেন কীভাবে দর্শকদের স্ক্রিনে ধরে রাখতে হয়, গল্পে টান দিতে হয়। কীভাবে সিনেমাকে শুধু বিনোদন নয়, আলোচনার বিষয় বানাতে হয়। তার ‘পরাণ’, ‘দামাল’, ‘সুড়ঙ্গ’, ‘তুফান’ বা সাম্প্রতিক ‘তাণ্ডব’—সব ছবিতেই একটা নিজস্ব ছাপ আছে। সিনেমাগুলো যতটা গল্প বলেছে, ততটাই ইঙ্গিত দিয়েছে, ‘দেখো, ঢালিউড এখন ঘুমিয়ে নেই।’

Taandob-10

সবচেয়ে প্রশংসার বিষয়, রাফী নিজের নামে একটা জায়গা তৈরি করেছেন। যেখানে পরিচালকরা অনেক সময় আড়ালেই থেকে যান, সেখানে তার নামটাই যেন সিনেমার পোস্টারে আলাদা আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। তবে একটু অভিযোগ তো থাকবেই, তাই না?

তার সিনেমায় নারী চরিত্রগুলো নিয়ে বরাবরই সমালোচনা হয়েছে। প্রায়ই তাদের দেখা যায় স্ক্রিন টাইমের প্রয়োজনে, কিন্তু নিজেদের শক্তির অভাবে। তবে তাণ্ডব-এ সেই জায়গায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। নারী চরিত্র এখানে আরও স্বাধীন, আরও বাস্তবসম্মত। এটা নিঃসন্দেহে অগ্রগতি। আমরা চাই এই ধারা বজায় থাকুক।

surango23-1

একটা ছোট অনুরোধ অবশ্য প্রিয় নির্মাতার কাছে রয়েই যায়। চিত্রনাট্য বা দৃশ্য নির্মাণে বিদেশি সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার ব্যাপারটা যেন একটু কমে। রেফারেন্স বা ওমাজ (হোমাজ) এক জিনিস, কিন্তু যদি একাধিক দৃশ্য স্পষ্টভাবে পরিচিত সিনেমাগুলোতে দেখা যায়, তখন তা আসল পুরো সিনেমার ওপর ছায়া ফেলে। রাফীর নিজস্ব ভিজ্যুয়াল ভাষা আছে, নিজস্ব গতি আছে— সেগুলোকে আরও পরিণতভাবে ব্যবহার করলেই তিনি শুধু ‘ভালো পরিচালক’ নন, কাল্ট ক্ল্যাসিক হয়ে উঠবেন।

তাণ্ডব ২ নিয়ে যেমন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, ঠিক তেমনি তুফান-এর সিকুয়েল নিয়েও আমাদের প্রত্যাশা অনেক। রাফী দেখিয়েছেন যে তিনি সাহসী, তিনি ট্রেন্ডের বাইরে গিয়ে নিজেই ট্রেন্ড তৈরি করতে পারেন। এখন দরকার একটু সংযম, আর একটু গভীরতা।

TOOFAN-24

রায়হান রাফী আমাদের সিনেমা হলে এক নতুন সময়ের সূচনা করেছেন। আমরা তার আগামী কাজগুলো দেখার জন্য মুখিয়ে আছি—আশা করছি, তিনি নিজের গল্প বলার সেই স্বতন্ত্র কণ্ঠকে আরও বেশি করে সামনে আনবেন।

লেখক: শেখ আহমেদ নিরোজ, চাকরিজীবী