রাফিউজ্জামান রাফি
২৫ মে ২০২৫, ০২:২৯ পিএম
আগামী ৫ জুন মুক্তি পাচ্ছে অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। এরইমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে ট্রেলার। যেখানে বিশেষভাবে নজর কেড়েছেন রুনা খান। মোশাররফ করিমের সঙ্গে তার একটি দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো সয়লাব।
ওই দৃশ্যে হতাশ রুনা খানকে বলতে শোনা যায়, ‘তুই কয়ডা বিয়া করছস?’ বেকায়দার পড়া মোশাররফের উত্তর দেন, ‘চাইরডা’। ফের রুনার প্রশ্ন, ‘তাইলে আমি কয় নাম্বার?’ মোশাররফের উত্তর, ‘ছয় নাম্বার’। ভাইরাল এই দৃশ্যের সূত্র ধরেই ঢাকা মেইলের সঙ্গে ফোনালাপ জমেছিল অভিনেত্রীর।
দৃশ্যটি এরকম ভাইরাল হবে ভেবেছিলেন?
না, ভাবিনি। ভাবার কথাও না। কেননা ট্রেলারকে একটি কনটেন্টের পরিচয় পর্ব বলা যেতে পারে। সেখান থেকে এরকম একটি ছোট দৃশ্য ভাইরাল হবে আমি কোনোভাবেই চিন্তা করিনি। তবে আমার সংলাপগুলো যে নজর কাড়বে ধারণা করেছিলাম। কেননা দৃশ্যটি ধারণের সময় অমিতাভ (অমিতাভ রেজা চৌধুরী) ভাই, মোশাররফ করিম ভাই, সিনেমাটোগ্রাফার খসরু ভাইসহ টিমের সবাই এত এনজয় করছিলেন যে বুঝতে পারছিলাম সবার ভালো লাগছে। কিন্তু এই পরিমাণ ভাইরাল হবে চিন্তাও করিনি। একটি পেজেই দেখলাম চার-পাঁচ মিলিয়ন ভিউজ! পোষ্টার, ভিডিও, সংলাপ— অর্থাৎ শেয়ারের যত ফরম্যাট সবভাবেই করা হয়েছে। এটা অপ্রত্যাশিত। খুব অবাক হয়েছি।

‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’য় একঝাঁক তারকা। অথচ সিরিজটি মুক্তির আগেই আপনি দর্শকের মন জয় করে নিলেন। কেমন লাগছে?
অনেস্টলি বললে একইরকম ঘটনা গত বছর ঘটেছিল। কাজল আরেফিন অমি নির্মিত ওয়েব ফিল্ম ‘অসময়ে’র বেলায়। সেখানে আমার ও ইন্তেখাব দিনারের ঝগড়ার একটি দৃশ্য ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ার ভাষায় বললে ওই দৃশ্যও ভাইরাল হয়েছিল। বিভিন্ন ফরম্যাটে একইভাবে শেয়ার হয়েছিল। তবে আমি মনে করি একটি দৃশ্য দর্শকদের এতো সমাদর পাওয়ার পেছনে অভিনয়শিল্পীর ভূমিকা খুবই কম থাকে। ‘অসময়ে’র ওই দৃশ্য ভাইরালের কৃতিত্ব কাজল আরেফিন আমির। ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’র কৃতিত্ব অমিতাভ রেজা চৌধুরীর এবং স্ক্রিপ্ট যারা করেছে সেই টিমের। পুরো টিমের কথা বলছি আমি। ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’য় মোশারফ করিমের ৮ জন স্ত্রী। অনেস্টলি বিশ্বাস করি, এই দৃশ্যে আমি না থেকে যদি তাদের কেউ অর্থাৎ মৌসুমী হামিদ, তানজিকা আমিন বা রোবেনা রেজা জুঁই থাকতেন একই রকম প্রতিক্রিয়া হয়তো হতো। নিজের ক্ষেত্রে বলব আমি একটু আশীর্বাদপুষ্ট বলেই দৃশ্যটি আমার ভাগ্যে জুটেছে। পরিচালক এই দৃশ্যে আমাকে চিন্তা করেছেন।
আম্বিয়া চরিত্রটি বেশ আত্মবিশ্বাসী ও গরম মেজাজের। ব্যক্তিগত জীবনে আপনি আত্মবিশ্বাসী বুজতে পারি। মেজাজটাও কি আম্বিয়ার মতো গরম?
আমি আশেপাশের আট-দশজনের মতোই একজন মানুষ। স্বাভাবিক অনুভূতি— রাগ, আনন্দ, ক্ষোভ, উচ্ছ্বাস আমার মধ্যেও আছে। বিরক্ত কিংবা মেজাজ খারাপ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে বিরক্ত হই, মেজাজ হারাই।

সিরিজটি করতে গিয়ে এমন কোনো অভিজ্ঞতা হয়েছে যা ভাগ করা যায়?
আলাদা করে কোনো অভিজ্ঞতার কথা বলতে পারব না। তবে ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’য় আমার সহশিল্পী মোশাররফ করিম একজন অসাধারণ অভিনেতা। অসাধারণ সহযোগিতা করা একজন সহশিল্পী। সিনেমাটোগ্রাফার খসরু ভাইসহ পুরো টিমের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা দারুণ। অমিতাভা রেজা চৌধুরী আমার ভীষণ পছন্দের পরিচালক। ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে তার নির্দেশনায় গ্রামীণফোনের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছিলাম। সেটি আমার ক্যারিয়ারের একটি টার্নিং পয়েন্ট ছিল। তারপর ওনার সঙ্গে আরও অনেক কাজ হয়েছে।
আম্বিয়া হয়ে উঠতে চ্যালেঞ্জ কতটা ছিল?
চরিত্রটা ঠিক মফস্বলের না। মফস্বলের থেকে ছোট একটি শহরের। আমিও জন্মেছি গ্রামে। বড় হয়েছি উপজেলা শহরে। প্রান্তিক মানুষের জীবন আমার খুব কাছে থেকে দেখা আমার। কেননা আমি ওর মধ্যেই বেড়ে উঠেছি। সেকারণে ঠিকঠাক পরিচালক পেলে ওই জীবনকে পর্দায় আনা খুব কষ্টসাধ্য হয় না। আমার জন্য বরং কঠিন ছিল ‘অসময়ে’র এমিলি রহমান হওয়া। খুবই উচ্চবিত্ত নারীর চরিত্র ছিল সেটি। অতো উচ্চবিত্তদের জীবন আমি কাছে থেকে দেখিনি। আমি নিজে মধ্যেবিত্ত মানুষ। থিয়েটারের সঙ্গে থেকেছি। ফলে ওই চরিত্রটি পর্দায় বিশ্বাসযোগ্য করা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল।

বর্তমান ব্যস্ততা…
তিনটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের শুটিং শেষ হয়েছে। এগুলো হচ্ছে মাসুদ পথিকের ‘বক’, কৌশিক শংকর দাসের পরিচালনায় ‘দাফন’ এবং জাহিদ হোসেনের ‘লীলা মন্থন’। ছবিগুলো কবে নাগাদ মুক্তি পাবে— পরিচালকরা ভালো বলতে পারবেন। আরেকটি ওয়েব সিরিজের কাজ শেষ করে রেখেছি। শাহরিয়ার নাজিম জয়ের পরিচালনায় ‘পাপকাহিনি’। এছাড়া সোহেল রানা বয়াতির পরিচালনায় ‘নিদ্রাসুর’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। এই দুটি কাজও মুক্তির অপেক্ষায় আছে। আরও দুটি সিনেমার চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সে সম্পর্কে এখন বলা বারণ।
আরআর