বিনোদন ডেস্ক
১৮ মে ২০২৫, ০১:৪৭ পিএম
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দারের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার অভিযোগে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের নাম মনিবুল হক বসুনিয়া। তিনি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের আবুল কাশেম সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এছাড়া প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খানের ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে প্রতিক্রিয়া (রি-অ্যাক্ট) জানানো ও মন্তব্য করায় মৎস্য অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফের স্বাক্ষরে পাঁচ কর্মকর্তাকে আলাদা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনা দুটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে সমালোচনা। যা নজরে পড়েছে নির্মাতা আশফাক নিপুনেরও। সোশ্যাল হ্যান্ডেলে এ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। ফেসবুকে সরকারের সমালোচনায় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রথা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
শুরুতেই নিপুন লিখেছেন, ‘ফেসবুকে সরকারের সমালোচনার নজরদারি আর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রথা বন্ধ করেন Chief Adviser GOB।’
এরপর লেখেন, ‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়ার ৪ মাস পরে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে শিক্ষক মনিবুল হক বসুনিয়াকে। অন্যদিকে সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নিয়ে লেখা এক পোষ্টে দু:খিত রিয়্যাক্ট দেওয়ায় শোকজ করা হয়েছে একই মন্ত্রণালয়ের ৫ জন কর্মচারীকে। অবিশ্বাস্য!’
মহানগরের নির্মাতার কথায়, ‘আপনারা গণ অভ্যুত্থানের বিজয়ের ফলে প্রাপ্ত নাগরিক সরকার। প্রধান উপদেষ্টা প্রায়শই তাঁর বক্তৃতায় বলেন মন খুলে সরকারের সমালোচনা করতে। নাগরিকদের সমালোচনা করার জায়গা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে যদি শিক্ষক বরখাস্ত হন আর কর্মকর্তা শোকজ নোটিশ খান তাহলে দ্বিচারিতার এরচেয়ে বড় উদাহরণ আর হইতে পারে না।’
তিনি যোগ করেন, ‘ফেসবুকে সমালোচনা করার অপরাধে (?) শাস্তি দেওয়া সংস্কারের কোনো পর্যায়েই পড়ে না। বরং শেখ হাসিনার আমলে শুরু হওয়া এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির কারণে শাস্তির সংস্কার হইতে পারে সব ধরণের সমালোচনাকে আমলে নেওয়া, সহ্য করা এবং নাগরিককে নিরাপত্তা দেওয়া।’
সবশেষে আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘অবিলম্বে শিক্ষক বসুনিয়ার চাকরি ফিরিয়ে দেন। এবং যে সকল মন্ত্রণালয় থেকে এই ধরণের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন। সরকারের সমালোচনা করা রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার, প্রাপ্ত কোনো দয়া দাক্ষিণ্য না।’