images

বিনোদন

একসময় সবাইকে কথা হিসাব করে বলতে হয়েছে: আফজাল হোসেন 

বিনোদন ডেস্ক

০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৯ পিএম

চিরসবুজ অভিনেতা আফজাল হোসেন অভিনয়ে অনিয়মিত হলেও নিয়মিত সামাজিক মাধ্যমে। বিভিন্ন বিষয়ে মনের ভাব প্রকাশ করেন। এবার তার ফেসবুকে দেখা গেল এমনই একটি পোস্ট যেখানে অভিনেতা কথা বলেছেন বাক স্বাধীনতা নিয়ে।

শুরুতেই আফজাল হোসেন লেখেন, ‘কিছুদিন আগে যখন ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছিল, সে সময় একদিন অফিসে দাঁড়িয়ে তিনতলা থেকে সে নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অবাক হয়ে দেখছিলাম। দেখছিলাম— আমাদের অনিয়মের শহর ছুঁ মন্তরে নিয়ম মেনে চলতে পারে।’

এরপর লিখেছেন, ‘মানুষ ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন এই শহরের রাস্তায় কীভাবে চলাচল করে তা সকলেরই জানা। নিয়ম মানা কারও ধাতে নেই। দীর্ঘকাল ধরে অনিয়ম করতে করতে স্বাভাবিক চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়ম না মানা। যে যত বেয়াড়া সে তত স্মার্ট এই শহরে।’

277077350_5628308987197174_3936489281226436929_n

অভিনেতার কথায়, ‘রাস্তায় চলাচলের যতরকম নিয়ম আছে, কেউই মানতে পছন্দ করে না। করত না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, চাইলেই সব পারা যায়। মনে কথাটা ভেসে ওঠে— বাঙালি শক্তের ভক্ত নরমের যম। যে মানুষ যত উল্টোপাল্টা সমস্ত শহর জুড়ে বীরদর্পে করে থাকে, একই মানুষ ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে চলাচলের সময় চিরকালের ভদ্রলোকের মতো কড়ায় গণ্ডায় নিয়ম মানে।’

এরপর লিখেছেন, ‘সেদিন ওপর থেকে দেখছিলাম, কেউ এগোনোর জন্য একটু অনিয়ম করতে চেয়ে গাড়ির মাথাটা লাইন থেকে অল্প বের করে দিতে চেয়ে যেই দেখেছে সামনে একটু দূরে কোনো ছাত্রকে দেখা যাচ্ছে— সাথে সাথে গাড়ি জায়গামতো ফিরিয়ে নিয়ে খুব ভালো মানুষ হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পথচলা স্বাধীন করে দেওয়া হলো। আবার শহর ও মানুষ নিজের চলা, বলা ফেরত পেয়ে গেল। সবাই চলছে নিজের ইচ্ছামতো, বলছেও যার যার যেমন ইচ্ছা- তেমন করে।’

আফজাল হোসেনের ভাষ্য, ‘একসময় সবাইকে কথা হিসাব করে বলতে হয়েছে। এখন যার যেমন খুশি বলা যায় বলে লাগাম ছাড়া কথা বলাবলি হচ্ছে। যখন বলার দরকার— বলা হয়নি, বলা যায়নি। বিড়াল হয়ে কাটানো জীবনে হঠাৎ বাঘ হয়ে দেখানোর সুযোগ মিলেছে। এখন মানুষ নিশ্চিত— নিজের গলায় বাঘের গর্জন দিলে কারও চোখ রাঙানি দেখতে হবে না বা ঘাড় চেপে ধরতে আসবে না কেউ।’

4aa243578894c5d8e760b30041f0f074-614b51b97a83e

আরও লিখেছেন, ‘আমাদের সভ্যতার ভব্যতার সীমা জানা নেই। অপমানজনক আচরণ, কথা বলায় আমাদের দক্ষতা সর্বজনবিদিত। এখন যেন বুক ফুলিয়ে অনুচিত কাণ্ড করা যায়। যেমন খুশি বলে ও করে মর্যাদা বৃদ্ধির সুবর্ণ সুযোগ এসেছে।’

তার কথায়, ‘গতকাল দেখতে পেলাম অসম্মান করে কথা বলা মানুষকে নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলে খবর হয়েছে। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তাকে পর্দায় হাজির করা হলো। টেলিফোনে দায়িত্বশীল, দেশপ্রেমিক দাবি করা মানুষটাকে বলতে শোনা গেল— সে উচিত কাজই করেছে, কোনো অন্যায় করেনি।’

সবশেষে আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘দিন দিন নিশ্চয়ই আরও উন্নতি হবে। ইচ্ছামতো নুন মরিচ দিয়ে স্বাধীনতা চটকে আমরা অনেকেই বিচিত্র পদের ভর্তা বানিয়ে খেতে পারব। স্বাধীনতার ভর্তা বানানোর নানা রকম রেসিপি আগ্রহ নিয়ে মুখস্ত করার মানুষ দেশে বহু আছে। সেই বহুর জন্য রেসিপি বাজারজাত করে জনপ্রিয় হতে উৎসাহী মানুষ, প্রতিষ্ঠানও কম নেই।’