বিনোদন ডেস্ক
২০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ পিএম
ইতিহাসের পাতায় স্বাধীন বাংলার শেষ নবাব একজন। তবে ঢালিউডের পর্দায় বাংলার নবাব হিসেবে পরিচিতি রয়েছে দু’জন অভিনেতার। তাদের একজন কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ১৮ আগস্ট (শুক্রবার) ছিল তার জন্মদিন। ৮২ পেরিয়ে ৮৩ তে পা রাখার দিনটি অভিনেতার পরিবারের সদস্যরা কেক কেটে ঘরোয়াভাবে পালন করেছেন।
তবে পর্দার নবাবের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে আসেনি চলচ্চিত্রাঙ্গনের কেউ। এ প্রসঙ্গে তার পুত্রবধূ সোনিয়া ইসলাম জানান, দীর্ঘদিনের সহকর্মীদের কেউ এ অভিনেতার খোঁজ নিতে আসেননি, জানাতে আসেননি শুভেচ্ছা।
এখন কেমন আছেন প্রবীর মিত্র— জানতে চাইলে সোনিয়া ইসলাম জানান্, তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই, হাঁটাচলা করতে পারেননি। হাঁটুতে একটা অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল, তবে বয়সের কারণে চিকিৎসকেরা সেই অস্ত্রোপচারে সায় দেননি।
প্রবীর মিত্র দীর্ঘদিন সেগুনবাগিচায় বাস করেছেন। তবে এখন আর সেখানে থাকেন না তিনি। সন্তানদের নিয়ে বসতি গড়েছেন ধানমন্ডির একটি বাসায়। তবুও সুখ নেই প্রবীর মিত্রের মনে। কেননা ক্যামেরা, লাইট, অ্যাকশনের দুনিয়া থেকে আজ তিনি অনেক দূরে। দীর্ঘ চারদশকের অভিনয়জীবন আজও তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। তবুও ফেরা হয় না সে জীবনে। কেননা আজকাল কেউ আর অভিনয়ে ডাকে না তাকে। তাই যাওয়া হয় না এফডিসিতে।
কিন্তু জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটানো এফডিসিকে ভুলতে পারেন না তিনি। প্রাণের সখার মতো অনুভব করেন তাকে। এ প্রসঙ্গে গত বছর তিনি বলেছিলেন, ‘এফডিসিতে যেতে ইচ্ছা করে, গেলে মনে হয় আমি নিশ্বাস ছাড়লাম। না গেলে মনে হয়, আমি না খেয়ে আছি। মন উদাস লাগে। রোজ এফডিসিতে যেতে চাই।’
সহধর্মিণী অজন্তা মিত্র পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন ২০০০ সালে। তারপর থেকে মনের একান্ত কথাটুকু ভাগ করার মানুষটিও খুঁজে পান না তিনি। ফলে ঘরে শুয়ে বসে পত্রিকা পড়ে, টিভি দেখেই কাটে তার একলা সময়।
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এই অভিনেতা বেড়ে উঠেছেন পুরান ঢাকায়। স্কুল জীবন থেকেই ছিলেন অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত।
১৯৬৯ সালে ‘জলছবি’ নামক একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ঢালিউডে নাম লেখান প্রবীর মিত্র। নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে ক্যারিয়ারে শুরু করলেও পরে চরিত্রাভিনেতা হিসেবেই পর্দায় মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময়ে অভিনয় করেছেন অজস্র চলচ্চিত্রে।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’ তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।