images

শিক্ষা

এ কেমন ফল প্রকাশ করল এনটিআরসিএ

পিয়াস সরকার

২৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:২৪ এএম

১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ৬৪ নম্বর পেয়ে পাস করেছিলেন শরিফুল ইসলাম। রংপুরের এই ছেলে বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিম্ন বেতনের চাকরি করছেন। তার একমাত্র সন্তানের বয়স দুই বছর। বাবা-মায়ের চিকিৎসাসহ পুরো পরিবারের দায়িত্ব তার কাঁধে। অপেক্ষায় ছিলেন চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির।

গত ১৩ মার্চ চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এতে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় ৬৮ হাজার ৩৯০টি শূন্য পদ থাকলেও একটি প্রতিষ্ঠানেও চাকরির সুপারিশ পাননি শরিফুল ইসলাম। কিন্তু তার চেয়ে কম নম্বর পেয়েও অনেকেই হেসেছেন বিজয়ের হাসি।

শরিফুলের মতো মুখ বেজার আয়েশা আক্তারেরও। তিনি ১৪তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, থলিতে ৬০ নম্বর। আয়েশা বলেন, অনেকদিন ধরেই অপেক্ষায় ছিলাম চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আমার নাম সুপারিশে না দেখে অবাক হয়েছি। আমার চেয়ে কম নম্বর পেয়েও অনেকের সুযোগ হয়েছে, কিন্তু আমার হয়নি।

শরিফুল, আয়েশার মতো অনেকেই এমন অভিযোগ করেছেন। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা বলছেন, চয়েজ লিস্টে নাম থাকা সত্ত্বেও সুযোগ পেয়েছেন কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা।

১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনে আইসিটি (প্রভাষক) বিষয়ে জাতীয় মেধাক্রমে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছেন মো. আল মেহেদী। তিনি বলেন, আমার চয়েজ অর্ডারের ১ম ও ২য় কলেজে কম্পিউটার সায়েন্সের ১৮৯ ও ৭০ মেধাক্রমকে সুপারিশ করা হয়েছে। অথচ আমি মেধাক্রমে পঞ্চম অবস্থানে থেকেও সুপারিশ পাইনি।

এই সমালোচনার জেরে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির আওতায় বিভিন্ন পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রথম থেকে পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের সনদ দাখিল করতে বলেছে এনটিআরসিএ। কিছু নিবন্ধনধারীর গণবিজ্ঞপ্তির তালিকায় স্থান পাওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

১৬ মার্চ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২১ ডিসেম্বর প্রকাশিত ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির আওতায় প্রথম থেকে পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যেসব প্রার্থী বিভিন্ন পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের নিবন্ধন পরীক্ষার সনদ এবং নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনের সময় দাখিলকৃত সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ যাচাই করা প্রয়োজন। আবশ্যিকভাবে আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে ছক অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্যসহ সরাসরি এনটিআরসিএ কার্যালয়ে জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হলো। প্রার্থীর রোল ও ব্যাচ, নির্বাচিত পদের নাম, প্রার্থীর নাম ও মোবাইল নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সব সনদের বিবরণ, নিবন্ধন সনদ ও এনআইডি বিবরণ ছকে উল্লেখ করতে হবে।

নির্ধারিত তারিখের মধ্যে শিক্ষক নিবন্ধনের সনদসহ সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের সত্যায়িত ফটোকপি ও ছকে উল্লিখিত তথ্য প্রেরণে ব্যর্থ হলে নিয়োগ সুপারিশের জন্য বিবেচনা করা হবে না।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, প্রার্থীরা আবেদন করেছেন অনলাইনে। তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কম্পিউটারের মাধ্যমে। এটি অটোমেটিক প্রক্রিয়া। কিছু ভুল হতেই পারে। ইতিমধ্যেই আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি।

পিএস/জেএম/এমআর