নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, শহিদ শরীফ ওসমান হাদি এখন আর শুধু একজন ব্যক্তি নন-তিনি ইতিহাস, তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তার মৃত্যুতে মানুষের যে গভীর ভালোবাসা ও আবেগ প্রকাশ পেয়েছে, তা প্রমাণ করে আধিপত্যবাদ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে পুরো বাংলাদেশ সবসময় একাত্ম।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে হাদির দাফন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও জাতির ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের অগ্রসৈনিক শহিদ শরিফ ওসমান হাদির দাফন আজ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তার এক সন্তানকে মায়ের মতো বুকে টেনে নিয়েছে।
উপাচার্য জানান, পরিবারের অনুরোধ, ডাকসু নেতৃবৃন্দের প্রস্তাব, সরকারের নির্দেশনা এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মাজারসংলগ্ন এলাকায় শহিদ ওসমান হাদিকে কবরস্থ করার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
অধ্যাপক ড. নিয়াজ বলেন, এই কবরস্থানে সমাধিস্থ হওয়ার সুযোগ খুব অল্পসংখ্যক সৌভাগ্যবান মানুষের হয়, যা শহিদ ওসমান হাদির হয়েছে। এটি তার অবদানের প্রতি জাতির গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন।
উপাচার্য বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং সারা দেশবাসীর পক্ষ থেকে শহিদ ওসমান হাদিকে সম্মান জানানো হলো। আমরা আশা করি, তার আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।
হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ড কোনো সাধারণ অপরাধ নয়; এটি একটি আদর্শকে স্তব্ধ করার অপচেষ্টা। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে পূর্ণাঙ্গ বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এরপর শহিদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।
এদিকে শহিদ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ শোক পালন করা হয়। এ উপলক্ষে উপাচার্যের ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
দাফনকালে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এমআর/এসএইচ/ক.ম