images

শিক্ষা

চবিতে যুবদল নেতার ‘শিবির ধর, জবাই কর’ স্লোগান ভাইরাল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৫ এএম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে ‘ধর ধর শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ স্লোগান দিয়েছেন যুবদলের এক নেতা। তার নাম জিএম সাইফুল ইসলাম। তিনি হাটহাজারী যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও মেখল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে এমন স্লোগান দেন। এ সময় স্থানীয় ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির কয়েক শত নেতাকর্মী অবস্থান নেন।

জানা গেছে, চবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের পদত্যাগের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জিএম সাইফুল ইসলাম জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন এবং এই উগ্র স্লোগান দেন।

সামাজিক মাধ্যমে স্লোগানের এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়।

চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, ‘এক সময়ে এই ধরনের স্লোগান ছাত্রলীগ দিত। আমরা আশা করেছিলাম ৫ আগস্টের পর এই ধরনের পুনরাবৃত্তি হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ছাত্রদল, যুবদল এবং কিছু বহিরাগত আবারো একই স্লোগান দিচ্ছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির মধ্যে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, এবং তারা ভবিষ্যতে ক্যাম্পাস দখলের কায়দায় এই স্লোগান ব্যবহার করছে।’

এ দিকে বহিরাতগদের অবস্থানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চাকসুর পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

bnp
যুবদল নেতার স্লোগান সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।

চাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সাঈদ বিন হাবিব স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে যেভাবে দায়মুক্তি দিয়েছেন তা অনভিপ্রেত। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল জায়গায় থাকাবস্থায় যেকোনো বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিদের আরও বেশি যত্নবান হওয়া উচিত।’

‘১৫ ডিসেম্বর (সোমবার) এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয়। যার ফলে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার ভবনের কাজের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তির স্বীকার হয়। এক পর্যায়ে চাকসু নেতৃবৃন্দ এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দিতে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দকে আহ্বান করেন। কিন্তু ছাত্রদল নেতারা চাকসু নেতৃবৃন্দের সঙ্গে চরমে উদ্ধতপূর্ণ আচরণ করে যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এক পর্যায়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের উপস্থিতিতে সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়। অন্যদিকে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে বহিরাগত যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের জিরো পয়েন্ট এলাকায় জড়ো করে এবং নানা ধরনের উগ্র স্লোগান দিতে থাকে যা পরিস্থিতিকে ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত করে তোলে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের নিয়ে এসে ছাত্রদল যে ঘৃণ্য সংস্কৃতির সূচনা করল তা কোনোভাবে কাম্য নয়।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ সকল ছাত্রসংগঠনকে ভবিষ্যতে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীলতা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট হয় এমন সকল কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান করছি, শিক্ষার্থীদেরকে বহিরাগত দুষ্কৃতকারীদের হাত থেকে নিরাপত্তা দিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

প্রতিনিধি/এমআর