images

শিক্ষা

‘বিপদ দেখে’ পিছু হটলেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা, রোববার থেকে নেবেন পরীক্ষা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩১ এএম

তিন দফা দাবিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা এবং আন্দোলনের নেতাসহ অনেককে স্ট্যান্ড রিলিজের মধ্যেই বিপদের আশঙ্কায় আন্দোলন থেকে পিছু হটেছেন শিক্ষকরা।

এ কারণে রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও সংগঠন ঐক্য পরিষদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করার কথা ঘোষণা করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য তিন দফা দাবি আদায়ে বাস্তবায়ন পরিষদ এবং সংগঠন ঐক্য পরিষদের চলমান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা ও সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আগামী রোববার থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। আগামী রোববার থেকে সকল শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে। উভয় পরিষদের আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে।

তিন দফা দাবিতে গত ২৭ নভেম্বর কর্মবিরতি শুরু করে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’। তাদের দাবিগুলো হলো-সহকারী শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেল আপাতত ১১তম গ্রেড দেওয়া, চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতার নিরসন এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি দেওয়া। বর্তমানে সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে আছেন।

গত সোমবার দাবি আদায়ে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচিও শুরু করে। এই পরিষদ বুধবার থেকে বিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করে। প্রায় একই দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের আরেকটি সংগঠন ‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর কর্মবিরতি পালন করেছিল। বৃহস্পতিবার থেকে তারাও বিদ্যালয়ে ‘তালাবদ্ধ’ কর্মসূচি শুরু করে। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো দেশের অনেক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা নিজেরাই ফটকে তালা লাগিয়ে দেন।

শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজে যোগ দিতে গতকাল বুধবার নির্দেশনা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশ না মানলে শৃঙ্খলাভঙ্গ, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনের বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষককে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়। প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে তাদের বদলি করা হয়। চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের নেতারাও ভিন্ন জেলায় বদলির তালিকায় আছেন। এমন অবস্থায় ‘বিপদ দেখে’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে রোববার থেকে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকরা।

বিইউ/এমআর