images

শিক্ষা

পুরুষ ভোটে নির্বাচিত হবেন প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৬ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে ভোটের উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। নির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছে ২৮ হাজার ৯০১ জন। ভোটার অনুপাত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভোটারদের মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ। এ কারণে মূলত পুরুষ ভোটে প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখছেন ভোটাররা। যদিও অনেকেই বলছেন নারী ভোটাররা প্রার্থী নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখবে। অনেক সময় তারা নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

তবে নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৫ জন, যা মোট ভোটারের ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ। নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন বা ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ। এই ভোটার অনুপাতকে কেন্দ্র করে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনে মূলত পুরুষ ভোটে প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ অধিকাংশ প্রার্থীই পুরুষ ভোটারদের লক্ষ্য করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। 

কমিশন বলছে, এবারের রাকসু নির্বাচনে ২৩টি পদে লড়ছেন ২৪৭ জন। পদভিত্তিক প্রার্থীর সংখ্যা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, সহ-সভাপতি পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ১৩ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন। এছাড়া ক্রীড়া ও খেলাধুলা সম্পাদক পদে ৮ জন, সহকারী ক্রীড়া ও খেলাধুলা সম্পাদক পদে ৬ জন। বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮ জন।

সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১০ জন, সহকারী সাংস্কৃতিক সম্পাদক ৯ জন প্রার্থী। মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং সহকারী মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে উভয়েই ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। নারী বিষয়ক সম্পাদক পদে ৬ জন, সহকারী নারী বিষয়ক সম্পাদক ৮ জন। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ১৩ জন, সহকারী তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৯ জন, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ৮ জন প্রার্থী লড়ছেন। পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে ১২ জন এবং সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যান সম্পাদক ১৬ জন প্রার্থী। সর্বশেষ, কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ৫৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা পোস্টার, ব্যানার এবং সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়। শিবির ও ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলগুলোর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও ক্যাম্পাসে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে আলোচনা, কোন প্রার্থী বা প্যানেল কতটা এগোতে পারবে।

নির্বাচন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম জানান, ভোট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। প্রতিটি কেন্দ্রে নির্দিষ্ট বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একজন শিক্ষার্থী মোট ৪৩টি ভোট দেবেন, রাকসুতে ২৩টি, সিনেটে ৫টি এবং হল সংসদে ১৫টি। ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০০টির বেশি সিসি ক্যামেরা বুথে বসানো হবে। প্রতিটি ব্যালট বাক্সে থাকবে স্ক্যানিং মেশিন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পুরুষ ভোটারদের সংখ্যাগত প্রাধান্য নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীরা পুরুষ ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্রচারণায় বেশি সময় ও শক্তি দিচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, ভোটারদের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বুথে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রেই পর্যাপ্ত বুথ, টেবিল ও ব্যালট বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। ভোটের দিন শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, এবারের রাকসু নির্বাচনে ভোটার অনুপাত প্রার্থীদের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পুরুষ ভোটারদের সংখ্যাগত প্রাধান্য ও নির্বাচনী আগ্রহের কারণে মূলত পুরুষ ভোটের মাধ্যমে প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভোটের ফলাফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে, কোন প্রার্থী বা প্যানেল শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।

শিক্ষার্থী নাসিমুল মুহিত ইফাত বলেন, পুরুষ ভোটারদের সংখ্যাই বড়, তাই প্রধান পদে নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য থাকবে। ভোটের সময় পুরুষ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি প্রার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ছাত্রী ফারিহা ইসলাম মিম বলেন, নারী ভোটাররা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে সংখ্যায় কম হওয়ায় পুরুষ ভোটের প্রাধান্য নির্বাচনের রূপ নির্ধারণ করবে।

এএইচ/এইউ