নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ এএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন মেট্রোরেল স্টেশনের সিঁড়িটি ঘিরে দেখা দিয়েছে চরম অব্যবস্থাপনা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফুটপাথে গড়ে উঠছে অস্থায়ী দোকানপাট। পাশাপাশি সড়কের অর্ধেক দখল করে রিকশা, সিএনজি ও মোটরসাইকেলের সারি। এতে মেট্রো থেকে নেমে আসা যাত্রীদের চলাচল যেমন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, তেমনি ওই এলাকায় প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে যানজট।
মেট্রোরেলের সিঁড়ির ঠিক পাশেই জমজমাট হয়ে উঠেছে খাবারের দোকান। ভাজাপোড়া, শরবত, পান-সিগারেটসহ বিভিন্ন আইটেম নিয়ে বসছে অস্থায়ী দোকানিরা। দোকানগুলো পুরো ফুটপাত দখল করে রাখায় পথচারীদের হেঁটে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে, মেট্রো যাত্রীদের সুবিধা নিতে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো দাঁড়িয়ে থাকে সড়কের উপরেই। এ অংশ এখন পরিণত হয়েছে এক ধরনের ‘অফিশিয়াল’ যাত্রী ওঠানামার জায়গায়। অথচ এখানে নেই কোনো নির্ধারিত পিকআপ বা ড্রপিং জোন। ফলে পুরো এলাকাজুড়ে তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা, যা প্রতিবছর বাড়ছে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ জানান, মেট্রো থেকে নেমে বের হওয়ার পরপরই হেঁটে যাওয়ার মতো জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ফুটপাথে হাঁটা যায় না, রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায়। সেদিক দিয়ে হাঁটাও বিপজ্জনক।
পথচারী সেলিম হোসেন বললেন, এখানে কোনো পরিকল্পিত ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট নেই। যাত্রী বাড়ছে, কিন্তু পরিবহন বা চলাচলের কোনো পরিকল্পনা নেই।

রিকশাচালক রফিক মিয়ার মতে, এখানে দাঁড়ানো ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, মেট্রো থেকে নামা যাত্রীদের কাছাকাছি গন্তব্যে নিতে হয়। তাই এখানেই দাঁড়াই।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই এলাকায় যদি দ্রুত পরিকল্পিত ড্রপিং জোন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করার উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে অচিরেই পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় যেভাবে যানবাহন ও দোকানের দখলে পড়ে পথচারী চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগজনক।
তাদের মতে, মেট্রোরেল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি বিকল্প কোনো ট্রানজিট ব্যবস্থাও চালু করা যেতে পারে, যাতে যাত্রী নামার পরপরই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।
এম/এইউ