বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
২৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৭ পিএম
গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে শিক্ষার মান উন্নত করার উদ্দেশে দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচারস লিঙ্ক (ইউটিএল)।
শনিবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্যাফেটিরায় সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে।
শহীদ উসমানের বাবা আব্দুর রহমান অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ঘোষণা করেন। এরপর ঢাবির ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস ইউটিএলের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনটির আহ্বায়ক আতাউর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা অনেকেই জানি না টিচার মানে কী। এই শব্দটির প্রথমটি দ্বারা বোঝায় ট্রাস্টেড টিচার (আস্থাভাজন শিক্ষক)। বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করা শিক্ষকদের নিয়ে আমরা এই সংগঠনটির যাত্রা শুরু করেছি।’
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। এই সংগঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হয়ে শিক্ষা, গবেষণা, আত্মমর্যাদা, চিন্তার স্বাধীনতা ও জাতীয় দায়িত্ববোধকে এগিয়ে নেওয়া। ১৯৪৭-এর আজাদি, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা এবং ২০২৪-এর জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে ইউটিএল এক সুনির্দিষ্ট ভিশন নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে।’
এসময় তিনি সংগঠনটির পাঁচটি ভিশন এবং পাঁচটি মৌলিক কাজ ঘোষণা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- একট অন্তর্ভুক্তিমূলক, আদর্শগতভাবে ভারসাম্যপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক শিক্ষক সংগঠন, অ্যাকাডেমিকে মুক্ত, নৈতিক ও গঠনমূলক জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা ও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবান্ধব ও নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা।
সংগঠনটির কিছু উল্লেখযোগ্য মৌলিক কাজ হলো- অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষতা সাধন, শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় কাজ করা, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করা এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থার জন্য কাজ করা।
এসময় বিল্লাল হোসাইন সংগঠনটির স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য ও কর্মসূচি পাঠ করেন। স্বল্পমেয়াদী উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ হলো- সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউটিএল ইউনিট প্রতিষ্ঠা, শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি, অবসর সুবিধা ও কর্মপরিবেশ বিষয়ে নীতিগত সুরক্ষা ও সংস্কারে কাজ করা, কারিকুলাম সংস্কারে সহায়তামূলক কাজ করা, ডিসিপ্লিন ও এক্সপার্টাইজ অনুযায়ী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্কলারদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা।
দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলো হলো- বাংলাদেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিসিপ্লিন ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ও নতুন প্রজন্মের শিক্ষকদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যম, শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালু করে পাঠদানে ও গবেষণায় একদল দক্ষ শিক্ষক তৈরি, দেশীয় মূল্যবোধ ও বৈশ্বিক মানের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও গবেষণা সহায়তার জন্য একটি স্বাধীন তহবিল গঠন করা।
এএইচ