নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ জুলাই ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক আহতের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এই সংখ্যা সঠিক নয় বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে দাবি করেছেন। হতাহতের সঠিক খরব প্রকাশসহ ছয় দফা দাবিতে সকাল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর সেই দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে হতাহতদের সংখ্যা লুকানোর অভিযোগ নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রশিক্ষণ বিমানটি যখন মাইলস্টোনের স্কুল শাখার হায়দার আলী অ্যাকাডেমিক ভবনে আছড়ে পড়ে, তখন সেখানে কতজন শিক্ষার্থী ছিল- সে তথ্য এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নিয়ে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এ নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারছে না।
ওই স্কুলের শিক্ষকরা জানান, ওই ভবনে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস হতো। ওই সময় দ্বিতীয় শিফটে অনেক শ্রেণির ক্লাস শেষ হয়েছিল। কিছু শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকরা নিয়ে বের হয়ে গিয়েছিল, কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবক একসঙ্গে ছিলেন। অনেকে আবার তখনও শ্রেণিকক্ষে ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের জনসংযোগ কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, অনেক গণমাধ্যমে কোচিংয়ের জন্য শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন এমন বলা হলেও সেটি সঠিক নয়। স্কুল ছুটির সময় ছিল ১টা ৩০ মিনিট। তবে অনেক ক্লাসের শিক্ষকরা একটু আগেই ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে যান। সেসব ক্লাসের শিশুরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে পড়েছিল। আর কিছু ক্লাসে শিক্ষার্থীরা ভেতরে ছিল।

জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, যেখানে বিমানটি পড়ে সেখানে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসরুম। দুটি ক্লাসে কমপক্ষে ৩০ জন করে ৬০ জন শিক্ষার্থী ছিল। তার মধ্যে অল্প কয়েকজন হয়তো বাইরেও ছিল। তবে ওই ভবনে কতসংখ্যক শিক্ষার্থী ক্লাস করে এ ব্যাপারে ‘সুনির্দিষ্ট’ তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমাদের কাছে স্কুলের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা থাকে। ক্লাস ধরে ধরে তথ্য আমরা পাইনি। ঘটনার পর আমাদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। তারা (মাইলস্টোন) কোনো সাড়া দেয়নি।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও বিষয়টি নিয়ে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা। তবে এখনো সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু, যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৭৮ জন। তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
এএসএল/জেবি