images

শিক্ষা

‘ফজর পর্যন্ত পড়তাম, তাহাজ্জুদ পড়ে দোয়া করতাম’

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ জুলাই ২০২৫, ০৬:২২ পিএম

রাত যখন নিস্তব্ধতায় আচ্ছন্ন, শহর ঘুমিয়ে পড়ে ক্লান্তির চাদরে, তখনও আলো জ্বলে থাকত এক কিশোরীর চোখে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ফাতেমা তাসনিম সারা বইয়ের পাতায় ডুবে থাকত গভীর মনোনিবেশে। একটানা পড়তে পড়তে ফজরের আজান ভেসে আসত মসজিদের মাইকে। তখন সে উঠে দাঁড়াত, অজু করত, তাহাজ্জুদের নামাজে হাত তুলে কাঁপতে থাকা কণ্ঠে বলত— ‘হে আল্লাহ, মা-বাবার স্বপ্ন যেন আমি পূরণ করতে পারি।’

সারার এই নিবেদন, অধ্যবসায়ের ফল আজ সবার সামনে। এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার স্বপ্ন প্রকৌশলী হওয়া। তবে শুধু নিজের ভবিষ্যৎ নয়, প্রযুক্তির জগতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায় সে।

সে বলে, আল্লাহর কাছে চেয়েছি শুধু একটিই জিনিস— নিজেকে সৎ ও পরিশ্রমী একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। তাহাজ্জুদের সময়টা আমার কাছে শুধু দোয়ার নয়, আত্মশুদ্ধিরও মুহূর্ত ছিল।

তার মা চোখে জল নিয়ে বলেন, সারাকে পড়াশোনার জন্য কখনও চাপ দেই নি, বরং ওর ভেতর থেকেই একটা শৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। বরং আমরা এতো রাত ধরে পড়াশোনার জন্য বকাঝকা করতাম। সারার পড়ার ঘরে কখনও উচ্চস্বরে টিভি চলে নি, ওর জন্য আমাদেরও জীবন বদলেছে।

সারা বলেছে, পরীক্ষা নিয়ে টেনশন ছিল। আমার পরীক্ষার আগের দিন আমার নানু মারা যান। আমি আমার নানুকে শেষবারের মতো দেখতে পাইনি। শোক কাটিয়ে অনেক কষ্টে পরীক্ষা দিয়েছি।

এসএসসির ফল প্রকাশের পরপরই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মা-মেয়ে। তাদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নজর কাড়ে সবার।

এমআই/এফএ