images

শিক্ষা

এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি, বাড়ছে ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ জুন ২০২৫, ০১:১০ পিএম

করোনা ও ডেঙ্গুর চলমান সংক্রমণের মধ্যেই সারাদেশে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সরকারের পক্ষ থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও ভিড় এড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হলেও, মাঠপর্যায়ে এসব নির্দেশনার বাস্তবায়ন দৃশ্যত অনুপস্থিত।

সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি কেন্দ্র— সরকারি বাঙলা কলেজ, ভাসানটেক সরকারি কলেজ, তেজগাঁও কলেজ ও ঢাকা স্টেট কলেজ পরিদর্শনে দেখা গেছে, কেন্দ্রের ভেতর-বাইরে স্বাস্থ্যবিধি কার্যত উপেক্ষিত। অধিকাংশ শিক্ষার্থী, অভিভাবক এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অনেককেই মাস্কবিহীন অবস্থায় দেখা গেছে। স্যানিটাইজার ব্যবহারের তদারকি নেই বললেই চলে।

পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে কেন্দ্রের প্রবেশপথে অভিভাবকদের জটলা তৈরি হয়। কেউ মাস্ক পরেননি, কেউবা মাস্ক সঙ্গে রেখেও তা ব্যবহার করছেন না। কোথাও কোথাও দেখা গেছে ধাক্কাধাক্কির মতো বিশৃঙ্খল অবস্থাও।

সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের সামনে অভিভাবক মাজেদ আহমেদ বলেন, ছেলেকে মাস্ক পরে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। কিন্তু নিজে আর গরমে মাস্ক পরতে পারছি না। 

আরেক অভিভাবক আয়েশা আক্তার বলেন, আমি বোরখা পরে এসেছি, তাই আলাদা করে মাস্ক পরা হয়নি। তবে মেয়ের হাতে দিয়েছি।

hsc-corona

আশরাফুল আলম নামের এক অভিভাবক বলেন, করোনার প্রভাব এখন তেমন নেই। তবে যারা পরীক্ষা দিচ্ছে, তাদের মাস্ক দিয়েছি।

কেন্দ্রের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের অনেককেই মাস্ক ছাড়াই পরীক্ষা দিতে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে কোনো কড়াকড়ি করছেন না। ফলে স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরভাবে মানা হচ্ছে না বলেই স্পষ্ট বোঝা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার সংক্রমণ হার নিম্নমুখী হলেও সম্পূর্ণ নিরাপদ বলা যাচ্ছে না। এর সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপও যোগ হয়েছে। ফলে যেকোনো গণজমায়েত বা ভিড় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে। 

পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে অভিভাবকদের ভিড়, মাস্কহীন চলাফেরা এবং তদারকির অভাবের কারণে পরীক্ষার্থীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, নির্দেশনার প্রয়োগে রয়েছে বড় ধরনের শৈথিল্য।

পরীক্ষা ঘিরে অন্তত মাসব্যাপী সময়ে কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন লাখো শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সমাগম ঘটবে। এই বাস্তবতায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না হলে গণসংক্রমণের ঝুঁকি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে এখনই প্রয়োজন তদারকি জোরদার করা, দায়িত্বপ্রাপ্তদের সক্রিয়তা বাড়ানো এবং অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করা। তা না হলে শুধু পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা-ভবিষ্যৎ নয়, স্বাস্থ্যও বিপন্ন হতে পারে।

এএসএল/এইউ