বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
২৬ মে ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ দে বিপ্লব।
রোববার (২৫ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিপ্লবের ভাই রাজু।
অনিরুদ্ধ দে বিপ্লব জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের (১৭ ব্যাচ) নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায়।
বিপ্লবের ভাই রাজু অনির্বাণ বলেন, হৃদরোগ জনিত অসুস্থতার কারণে বিপ্লব ২৬ দিন যাবৎ চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি ছিল। হার্টের এ সমস্যা তার ৬-৭ বছর আগে ছিল। আমরা তাকে কয়েকবার দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। যার ফলে সে প্রায় সুস্থ হয়ে গিয়েছিল এবং সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল। কিন্তু আগস্টে তার কিছু সহপাঠীদের কাছ থেকে ক্রমাগত মানসিক হেনস্থার কারণে সে এক পর্যায়ে মাইল্ড স্ট্রোক করে।
তিনি আরও বলেন, স্টোকের ফলে তার এক পা, হাত ও মুখের একপাশ অবশ হয়ে যায়। পাশাপাশি আবার সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। আমরা তাকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
রাজু বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া ওর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওখানে কিছু ভাইদের সাথে মিশে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়। শুধু এই কারণে সহপাঠীরা ওকে ক্রমাগত মানসিক নির্যাতন ও হুমকি দিত সরকার পতনের পর থেকে। যার ফলে সে আগস্টে গুরুতর মাইল্ড স্ট্রোক করে। আমার ভাই রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো অনৈতিক কাজ করেনি।
রাজু অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষকদের জানালেও তারা কোনো সহযোগিতা করেননি।
এ বিষয়ে নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবা সুলতানা বলেন, আমাদের একজন শিক্ষার্থী হার্টের সমস্যার কারণে মারা গেছে আমরা কিছুক্ষণ আগে জেনেছি। ওর অসুস্থতা ও অন্যান্য বিষয়ে আমি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়নি। দুইজন ছাত্র-উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তারাও আমাকে এ বিষয়ে কোনো কিছু অবগত করেনি। যদি শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হতো তাহলে আমারা অবশ্যই দেখতাম।
তিনি আরও বলেন, একাডেমিক মিটিং থাকার কারণে শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমবেদনা জানানো এখনও সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈদের ছুটি শেষে বিপ্লবের স্মরণে বিভাগের পক্ষ থেকে একটা স্মরণ সভা আয়োজনের পরিকল্পনা আছে আমাদের।
এফএ