নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ জুন ২০২৩, ১০:৪৯ এএম
নানা কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ সংকটসহ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝে আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হতে যাচ্ছে আজ। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম এই বাজেটের মূল শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘উন্নয়নের দীর্ঘ অগ্রযাত্রা পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’ বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেল ৩টায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এটি উপস্থাপন করবেন। এটি তার পঞ্চম বাজেট ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারের ব্যয় চালাতে এনবিআরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে কর রাজস্ব আদায়ের অঙ্ক চলতি (২০২২-২৩) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। এই অবস্থায় বেশকিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বিপরীতে নতুন অর্থবছরের বাজেটে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। এর ফলে বেশকিছু পণ্যের দাম কমতে পারে।
দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
আসন্ন বাজেটে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নির্মাণ সামগ্রী, সিগারেট, আমদানি করা মোবাইল ফোন, প্লট, ফ্যাট-গাড়ি, ভূমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন, বাসমতি চাল, কাজুবাদাম, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, খেজুরসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এসব পণ্য ও উপকরণে শুল্ক বাড়ানো ছাড়াও ভ্যাট বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে।
দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের
নতুন অর্থবছরের বাজেটে মাংস ছাড়াও দেশীয় বৈদ্যুতিক এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেট, মিষ্টি জাতীয় পণ্য, অভিজাত বিদেশি পোশাক, ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জসহ স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতি তৈরির সরঞ্জামের দাম কমতে পারে।
আগামী অর্থবছরের জন্য (২০২৩-২৪) প্রস্তাবিত বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে সরকারের ব্যয় চালাতে এনবিআরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর বাইরেও এনবিআর বহির্ভূত কর আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া সরকারের আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি সরকারের পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে কর রাজস্ব আদায়ের অঙ্ক চলতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।
অন্যদিকে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি ধরে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এই ব্যয় মেটাতে মোট কর আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৬৭ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বেশি।
এছাড়া নতুন অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশের ঘরে রাখা হয়েছে। টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ (অনুদানসহ) ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে ঘাটতি মেটাতে বিদেশি ঋণ বাবদ পাওয়া যাবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। পাশাপাশি সরকার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন খাত থেকে ঋণ নেবে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। আর অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে নেবে ১ লাখ ২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে নেবে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে নেবে ৫ হাজার কোটি টাকা।
/আইএইচ