নিজস্ব প্রতিবেদক
২৫ মার্চ ২০২২, ১১:০২ এএম
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বহুতল ভবনে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করেন ফজলু মিয়া। যা বেতন পান এর সিংহভাগই বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। নামমাত্র টাকায় এখানে নিজে চলেন। আস্ত একটি মাছ কেনার মতো সামর্থ্য তার নেই। মাছ খাওয়ার ইচ্ছে মেটান ‘ভাগা’ কিনে।
মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিনের অবিক্রীত মাছ যেগুলোতে সামান্য পচন ধরে, তবে খাওয়ার যোগ্য, সেগুলো রাতের দিকে কেটে ভাগ ভাগ করে বিক্রি করা হয়। কারণ এগুলো পরদিন পর্যন্ত রাখলে লোকসানের মুখে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। সাধারণ ক্রেতারা এসব কেনেন না। এই ভাগা মাছের ক্রেতা মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে মাঝারি ওজনের একটি রুই মাছ বিক্রি হয় ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে। কেটে ভাগা হিসেবে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। এক ভাগায় তিন থেকে পাঁচ পিস পর্যন্ত মাছ পাওয়া যায়।
মাছ বিক্রেতা আসাদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘রাইতে এগুলা কাইট্যা ভাগা কইরা বেচি। এমনিই এট্টু এট্টু নষ্ট থাহে, রাইখ্যা লাভ নাই। সকালের কিননেওয়ালারা এইসব নেয় না। ফালায়া দেয়নের চেয়ে ভাগা বেইচা যা পাওয়া যায় তাই লাভ।’

মোহাম্মদপুরেরই আরেক নিরাপত্তাকর্মী ফরিদ ঢাকা মেইলকে জানান, মাছটাই তারা ভাগা হিসেবে কেনেন। গরুর মাংস বা মুরগি এভাবে কেনার সুযোগ ঢাকায় কখনও পান না। এখানে বছরের দুই ঈদ ছাড়া গরুর মাংস খাওয়ার সুযোগ তাদের কমই হয়। বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়াদের কোনো অনুষ্ঠান থাকলে দারোয়ানরা কাজকর্ম করে দেয়, বিনিময়ে এক বাটি গরুর মাংসের তরকারি মেলে। কখনও কখনও শখ করে পরিচিত দুই তিনজন মিলেও কেনেন। মুরগির ক্ষেত্রেও প্রায় একই ব্যাপার ঘটে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরিবের মাছ বলে পরিচিত ছোট আকারের পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। ছোট চিংড়ির দাম হাঁকা হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৬০০ টাকা প্রতি কেজি। সিলভার মাছ পাওয়া যাচ্ছে আকারভেদে ১৭০ থেকে ২৩০ টাকা কেজিতে। আকারভেদে ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫৫০ থেকে ১০০০ টাকা প্রতিকেজি পর্যন্ত। মিশ্র ছোট মাছের কেজি চাওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকার আশেপাশে।
গত সপ্তাহের শবে বরাতে হুট করে বাড়ার পর স্বাভাবিক হয়েছে গরুর মাংসের দাম, প্রতিকেজি পাওয়া যাচ্ছে ৬৪০ থেকে ৬৬০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগিও ১৮০ থেকে নেমে এসেছে ১৬৫ টাকায়। দেশি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।
এসএ/জেবি