images

অর্থনীতি

তিন মুরগি ওজন করে একটি কিনলেন সুফিয়া

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৭ মার্চ ২০২৩, ০৫:০৫ পিএম

পবিত্র বরাতের রাতে বাসায় ভালো কিছু রান্নার চিন্তা নিয়ে রাজধানীর পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজারে মুরগি কেনার জন্য এসেছিলেন সুফিয়া খাতুন। বরগুনার সদর উপজেলার নলী এলাকার এই নারী ছেলের সঙ্গে থাকেন বাজারের পাশেই। অন্য সময় ৫০০ টাকা দিয়ে দুটি মুরগি নিতে পারলেও মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বাজারে এসে যেন তার মাথায় হাত পড়েছে।

কারণ মুরগির যে দাম তা তার নাগালের বাইরে। কোনটা কতটুকু কিনবেন সেই হিসাব মেলাতেই তার সময় পার। পরে পকেটের সঙ্গে সমন্বয় করতে তিনবারে তিনটা মুরগি ওজন করে একটা কিনতে সক্ষম হলেন এই নারী।

বেলা তিনটার দিকে সুফিয়া খাতুন যখন দরদাম শেষ করে মুরগি কেনা শেষ করেন তখন পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন এই প্রতিবেদক।

শবে বরাতের আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইতেই প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে তিনি আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, 'যেডায় হাত দেই হেইডায় আগুন। না খাইয়া মইরা যাইতে হইবে। আগে দুইটা মুরগি কিনতাম। আইজ মুরগি একটা কিনছি তাও তিনবার ওজন কইরা।'

hen2

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সুফিয়া খাতুনের মতো বেশিরভাগ ক্রেতারই একই অবস্থা। কোনোভাবেই যেন বাজেট মিলছে না। আবার বেশি দামের কারণে মুরগি বিক্রিতেও কিছুটা ভাটা পড়েছে।

অনেকেরই পছন্দের তালিকার বাইরে থাকা ব্রয়লার মুরগিও বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। অন্যদিকে পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে ৩০০ টাকা ছুঁয়েছে।

সুফিয়া খাতুনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রিকশাচালক ছেলের আয়ে তার সংসার চলে। কিন্তু দিনদিন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় জীবন চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে।

ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, 'এমনে কইরা চলতে থাকলে গ্রামে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। ঘর ভাড়া দেওয়ার পর আর টাহাই থাহে না। সারামাস খাওনদাওন কেমনে চলবে এটাই টেনশন।’

সুফিয়া খাতুনের আক্ষেপ সরকার গরিবের কষ্টের দিকে নজর দিচ্ছে না। তিনি বলেন, 'মাছ-মাংসের যে দাম এগুলো পুলিশ, উকিল আর বড়লোক ছাড়া কেউ খাইতে পারবে না।'

তার দুশ্চিন্তা সামনে রমজানে কীভাবে চলবে। বললেন, ‘দোকানদার বলতেছে সব কিছুর দাম নাকি আরও বাড়বে। ওই সময় কেমনে রোজা থাকমু, কেমন ইফতার করমু বুজতেছি না।’

বিইউ/জেবি