images

অর্থনীতি

গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব রড-সিমেন্টে

এইচ রহমান

০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০০ পিএম

গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের প্রভাব পড়েছে দেশের সব সেক্টরে। নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে আবাসন পণ্যও এর বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা পায়নি। সম্প্রতি গ্যাস ও বিদ্যুতের দামে অস্থিরতার ফলে রড-সিমেন্ট শিল্পে একদিকে যেমন বিক্রি ও উৎপাদন কমেছে। অন্যদিকে দাম বেড়েছে বহুগুণ। ফলে বর্তমানে প্রতি টন রডের দাম বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়া প্রতি ব্যাগ সিমেন্টে দাম বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা করে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেশে বড় ও মাঝারি আকারের ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টন। যেখানে বর্তমানে ৪০ লাখ টন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর আগে করোনা মহামারিতেও বিক্রি ছিল তলানিতে। অর্থাৎ বিক্রি নেমে এসেছে ২০ থেকে ২৫ লাখ টনে। যদিও এ খাতে বিএসআরএম, পিএইচপি ইন্টিগ্রেটেড স্টিল মিলস, কেআর স্টিল, এমএইচ স্টিল রি-রোলিং মিলস, মিলস, ইউনিটেক্স স্টিল মিলসসহ অন্যান্য উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা। তবে বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে আয় করছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।

Steel-Cementএ বিষয়ে বিএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ায় বড়রকম প্রভাব পড়েছে স্টিল মিলগুলোতে। কেবল বিদ্যুতে দাম বাড়ায় প্রতি টন রডে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টাকা দাম বেড়েছে। অর্থাৎ একদিকে উৎপাদন কমছে ও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে কমছে বিক্রি।’

একসময় আমদানিনির্ভর ছিল দেশের ইস্পাত খাত। পরে দেশীয় উদ্যোক্তারা সক্ষমতা বাড়াতে এনেছেন বৈচিত্র্য। এর অংশ হিসেবে ইস্পাত উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে নতুন প্রযুক্তিও। সময়ের ব্যবধানে ম্যানুয়াল থেকে অটোমেটিক মিল, অটো থেকে ইলেক্ট্রনিক আর্ক ফানের্স। আর সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে কোয়ান্ট্রাম আর্ক ফার্নেস, যা ইস্পাত খাতে উৎপাদন বাড়িয়েছে জ্যামিতিক হারে এবং কমেছে উৎপাদন ব্যয়ও।

Steel-Cementকিন্তু দেশের মোট ১২৫টি সিমেন্ট কারখানা থাকলেও ৩৩টি সিমেন্ট কোম্পানি সক্রিয় ভূমিকা পালন আছে। আর সম্মিলিত উৎপাদন সক্ষমতা ৪ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে ৪ কোটি মেট্রিক টন হলো কার্যকর ক্ষমতা। দেশের সিমেন্টের বাজারে ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আছে শাহ্ সিমেন্ট, বসুন্ধরা সিমেন্ট, সেভেন রিংস সিমেন্ট, ফ্রেশ সিমেন্ট, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, এমআই সিমেন্ট ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট।

সিমেন্টের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কথা হলে সেভেন রিংস সিমেন্ট লিমিটেডের কর্মকর্তা ইফতেখার উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘জ্বালানি দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমাতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ, ব্যয় অনেকাংশই বেড়েছে। মোটা দাগে বলতে গেলে বর্তমানে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ফলে বাধ্য হয়ে বাজারে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টে প্রায় ২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এরফলে বিক্রিও কমেছে বহুগুণ। এভাবে চলতে থাকলে কোম্পানিগুলোকে বিপুল পরিমাণ লোকসানে পড়তে হবে।’

এইচআর/আইএইচ