images

অর্থনীতি

ব্যাংকের টাকা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত আছে, গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২০ নভেম্বর ২০২২, ০১:৪৫ পিএম

ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করতে গ্রাহকরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বলে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ করেছে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশনের অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এমন গুজব ভিত্তিহীন। গ্রাহকদের টাকা সম্পূর্ণ নিরাপদ আছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। 

রোববার (২০ নভেম্বর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমরা সম্প্রতি দেশের ব্যাংকগুলোতে তারল্য নিয়ে অনেক গুজব লক্ষ্য করছি- বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বলা হচ্ছে, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তারল্য নেই। গ্রাহকদের নগদ টাকা তুলতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাত দিয়ে এসব নেতিবাচক খরব দেশ-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বিদেশে আমাদের প্রবাসীদের মধ্যেও এই গুজবটি ছড়ানো হচ্ছে, যাতে তারা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে অনুৎসাহিত হন। এগুলো খুবই দুঃখজনক।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর প্রভাব থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। গত কয়েক মাসে ক্রমেই চাপ বাড়ছে রিজার্ভে। দিনে দিনে কমে আসছে রিজার্ভ। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকটের কথা শোনা যাচ্ছে। ডলার সংকটে এলসি খোলাও অনেক জায়গায় বন্ধ রয়েছে।

এমন অবস্থার মধ্যে আলোচনা আছে ব্যাংকে নগদ টাকা তুলতে না পারার বিষয়ে। ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ারও গুঞ্জন বাজারে আছে।

এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিবৃতি দিয়ে গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছে। তাদের অর্থ সম্পূর্ণ নিরাপদ আছে বলে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবার ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে একথা জানানো হলো।

ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের অর্থ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত আছে এমনটা জানিয়ে বিবৃতিতে অ্যাসোসিয়েশনের অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেছেন, ‘এই গুজব প্রচারকারীরা আমাদের গ্রাহকদের, সমাজের এবং দেশের ক্ষতি করছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেড (এবিবি)’র পক্ষ থেকে বলতে চাই, এসব তথাকথিত তথ্যের কোনও ভিত্তি নেই এবং এগুলো অসত্য। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত অর্থ আছে। আমরা সম্মানিত গ্রাহকদের এই বলে আশ্বস্ত করতে চাই যে ব্যাংকগুলোতে তাদের অর্থ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত আছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা গ্রাহকদের অনুরোধ করবো, এই গুজবে বিশ্বাস না করার জন্য।’

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে তারল্যের কোনো ঘাটতি নেই, বাংলাদেশ ব্যাংকও এই বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উপরন্তু ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকাও বেশি অতিরিক্ত তারল্য আছে। গত ৫০ বছরে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ব্যাংককে ব্যর্থ হতে দিয়েছে এমন কোনও নজির নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক তো বলেই দিয়েছে, কোনও ব্যাংকের কোনও অসুবিধে হলে তারা এগিয়ে আসবে। অতীতেও আমরা দেখেছি ব্যাংকিং খাতে কোনও সংকট হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এগিয়ে এসেছে।’

এবিবির চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি ও দিকনির্দেশনায় ব্যাংকিং খাত যখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করছে এবং সরকারের প্রণোদনার উপর ভর করে অর্থনীতি যখন মহামারী থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে, তখন এ ধরনের অপপ্রচার চালানো দুঃখজনক।'

বিবৃতিতে বলা হয়, এবিবি বিশ্বাস করে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকনির্দেশনায় ও গ্রাহকদের আস্থায় ব্যাংকগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে এবং রাখবে।

বিইউ/এএস