images

অর্থনীতি

কোনো আমানতকারীর টাকা হারিয়ে যাবে না: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের আমানতকারীদের অর্থ সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে এবং পর্যায়ক্রমে তা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো আমানতকারীর টাকা হারিয়ে যাবে না—এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব তথ্য জানান।

আরিফ হোসেন খান বলেন, সদ্য একীভূত হয়ে কার্যক্রম শুরু করায় বর্তমানে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে সীমিত পরিসরে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে প্রতি আমানতকারী সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। অবশিষ্ট অর্থ নিজ নিজ হিসাবে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে এবং প্রচলিত হারে মুনাফাও যোগ হতে থাকবে।

তিনি বলেন, “ব্যাংক আর্থিকভাবে আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছালে পর্যায়ক্রমে বাকি অর্থ উত্তোলনের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরও বলেন, বিশ্বের কোনো ব্যাংকের পক্ষেই একসঙ্গে সব আমানতকারীর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করেই অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়, যা ডিপোজিট প্রোটেকশন আইনের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি জানান, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক নিয়মিত ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করবে, খেলাপি ঋণ আদায় করবে এবং নতুন আমানত সংগ্রহ করবে। এর মধ্য দিয়েই ব্যাংক ধীরে ধীরে সচ্ছল হয়ে উঠবে। ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা যত দ্রুত বাড়বে, আমানতকারীদের অর্থ উত্তোলনের সুযোগও তত দ্রুত সম্প্রসারিত হবে।

পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক—একীভূত হয়ে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে রূপ নেওয়ার আইনি ভিত্তি নিয়েও ব্যাখ্যা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র।

তিনি বলেন, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পদ ও দায় (অ্যাসেট অ্যান্ড লাইয়াবিলিটি) স্থানান্তরের ভিত্তিতেই পুরোনো ব্যাংকগুলো নতুন ব্যাংকে বিলীন হয়েছে। ফলে গ্রাহকদের নতুন করে কোনো হিসাব খোলার প্রয়োজন নেই। পূর্ববর্তী ব্যাংকের সব হিসাব, আমানত ও ঋণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন ব্যাংকে স্থানান্তরিত হয়েছে, যা সম্পূর্ণ আইনসম্মত।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে এর আগেও ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের নতুন চুক্তি বা হিসাব খোলার প্রয়োজন হয়নি—এটি প্রচলিত ও স্বীকৃত প্রক্রিয়া।

দুই লাখ টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে গ্রাহকরা নিজ নিজ পুরোনো শাখায় গিয়ে বিদ্যমান চেক বই ব্যবহার করেই অর্থ তুলতে পারবেন বলে জানান তিনি। নতুন চেক বই ইস্যু সময়সাপেক্ষ হলেও এতে গ্রাহকদের কোনো অধিকার ক্ষুণ্ন হবে না।

বড় অঙ্কের আমানত শেয়ারে রূপান্তরের বিষয়ে আরিফ হোসেন খান বলেন, বিষয়টি এখনো আইডিয়া পর্যায়ে রয়েছে। ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হলে পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এটি কোনোভাবেই বাধ্যতামূলক হবে না; বরং ঐচ্ছিক অপশন হিসেবে বিবেচিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের নতুন লোগো বাংলাদেশ ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।

টিএই/এএস