images

অর্থনীতি

কাঁচাবাজারে শীতের ছোঁয়া, ক্রেতাদের মুখে স্বস্তির হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৭ এএম

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর কাঁচাবাজারে ফিরতে শুরু করেছে স্বস্তির আবহ। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় আগের তুলনায় কমেছে দাম, আর তাতেই স্বস্তি প্রকাশ করছেন সাধারণ ভোক্তারা। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

এদিন সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, রায়েরবাগ, শনিরআখড়াসহ বিভিন্ন এলাকার কাঁচাবাজারগুলোতে সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারজুড়ে শীতকালীন সবজির আধিক্য। ভোর থেকেই ট্রাক ও পিক-আপভ্যানে করে গ্রামাঞ্চল থেকে আসছে নানা ধরনের সবজি। এতে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে এবং বিক্রেতারাও তুলনামূলক কম দামে সবজি বিক্রি করছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফুলকপি প্রতিটি ২০ থেকে ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ থেকে ২৫ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শিম কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ও মুলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং পালংশাক ও লালশাক প্রতিটি আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই কম।

যাত্রাবাড়ী আড়তের সবজি বিক্রেতা আবদুল খালেক ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এখন মাঠ থেকে পুরোদমে সবজি উঠতে শুরু করেছে। শীত যত বাড়বে, সরবরাহ তত বাড়বে। তখন দাম আরও কমবে। আগে যেসব সবজি ৮০–১০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন সেগুলো অর্ধেক দামে ব্রিক্রি করছি।’

একই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম জানান, শীতকালীন সবজির পাশাপাশি শাকের সরবরাহও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শাকপাতার দাম এখন খুবই কম। আগে এক আঁটি শাক ২৫ টাকা ছিল, এখন ১০–১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতা বাড়ছে।

বাজারে আসা ক্রেতাদের মধ্যেও স্বস্তির কথা শোনা গেছে। শনিরআখড়া কাঁচা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী শিউলি আক্তার বলেন, ‘গত কয়েক মাস বাজার করতে গিয়ে খুব কষ্ট হতো। সবজির দাম ছিল হাতের নাগালের বাইরে। এখন শীতের সবজি আসায় অন্তত সংসারের বাজারটা কিছুটা স্বস্তিতে করা যাচ্ছে।’

নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য দাম কমাকে বড় স্বস্তি হিসেবে দেখছেন অনেকেই। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘বেতন বাড়ে না, কিন্তু বাজারের জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। এখন কিছুদিনের জন্য হলেও বাজারে স্বস্তি এসেছে। যদি সরকার নজরদারি রাখে, তাহলে এই দামটা স্থায়ী হতে পারে।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দামের এই স্বস্তি ধরে রাখতে হলে পরিবহন ব্যয় ও মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণ জরুরি। অনেক সময় কৃষকের কাছ থেকে কম দামে সবজি কিনে তা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করা হয়, এতে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হন।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, শীত মৌসুমে কৃষিপণ্যের সরবরাহ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই দাম কমে আসে। তবে বাজার ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি থাকলে এই সুফল পুরোপুরি ভোক্তাদের হাতে পৌঁছায় না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীতের শুরুতেই রাজধানীর কাঁচাবাজারে দাম কমার এই প্রবণতা সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে। সামনে শীত আরও বাড়লে এবং সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে কাঁচাবাজারে ভোক্তাদের হাসি আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে-এমন প্রত্যাশাই এখন সবার।

এমআর/এমআই