নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০২ পিএম
দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সদস্যরা। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতিমালার সংস্কার, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন ও অটোমেশন প্রবর্তন, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণপ্রাপ্তি ও প্রক্রিয়া সহজীকরণ, শিল্পখাতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ এবং সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ঐকমত্যের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, প্রাক্তন সভাপতি ও সহ-সভাপতিবৃন্দ, প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দসহ সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির সূচনা বক্তব্যে তাসকীন আহমেদ উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘২০২৫ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, শুল্কহার বৃদ্ধি, সহায়ক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চলমান জ্বালানি সংকট দেশের অর্থনীতিকে নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত কিছু পদক্ষেপের ফলে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও, টেকসই ব্যবসা পরিবেশ নিশ্চিত করতে সুশাসন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সময়োপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন ও কার্যকর বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।’
ডিসিসিআই সভাপতি জানান, বেসরকারিখাতের স্থিতিশীলতা ও নীতিগত সহায়তা নিশ্চিত করতে চলতি বছরজুড়ে ঢাকা চেম্বার ৩১টি খাতভিত্তিক সেমিনার, নীতি সংলাপ, কর্মশালা ও ফোকাস গ্রুপ আলোচনার আয়োজন করেছে। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ৩৫টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও উদ্যোক্তাদের তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো ডিসিসিআই ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক (ইপিআই)’ চালু করেছে, যা উৎপাদন ও সেবা খাতের ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন পরিমাপ করবে।
বৈশ্বিক পরিসরে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ঢাকা চেম্বার এ বছর সংযুক্ত আরব আমিরাত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, হংকং ও তাইওয়ানসহ বিভিন্ন দেশে মোট সাতটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে এবং ছয়টি দেশি ও বিদেশি সংস্থা ও বাণিজ্য সংগঠনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে বলেও তিনি জানান। ভবিষ্যতেও দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে ঢাকা চেম্বার নিরলসভাবে কাজ করে যাবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সাধারণ সভার মুক্ত আলোচনা পর্বে ডিসিসিআই’র প্রাক্তন সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, প্রাক্তন পরিচালক ও আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, প্রাক্তন পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান, আলহাজ মোহাম্মদ সারফুদ্দিন এবং মেসার্স ব্র্যান্ড বাংলা’র স্বত্বাধিকারী রাজু আহমেদ মামুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী।
এমআর/এফএ