images

অর্থনীতি

হুহু করে বাড়ছে চালের দাম, সবজি নাগালের বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ আগস্ট ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে হঠাৎ করেই বেড়েছে অস্থিরতা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে শুক্রবার (২২ আগস্ট) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে—চাল ও সবজির দাম অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। হঠাৎ করেই প্রতিদিন দাম বাড়ছে মোটা, মাঝারি ও সরু চালের। সবজির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে একই চিত্র।

ক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে বাজারে এসে প্রতিটি জিনিসের দাম দেখে হতাশ হতে হচ্ছে। স্বল্প আয়ের মানুষদের পক্ষে চাল-সবজি কেনা প্রতিদিন কঠিন হয়ে উঠছে।

এক সপ্তাহ আগেও যে মোটা চাল পাওয়া যেত ৫০ থেকে ৫৪ টাকায়, সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে। মিনিকেট চালের দাম ৭৬ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০-৮২ টাকায়। নাজিরশাইলের দাম ৮৫-৮৮ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে।

পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালকল মালিকরা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। তারা মিল থেকে চাল সরবরাহ না করে মজুত করে রাখছে। এতে করে খুচরা বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে।

চালের আড়তদারদের দাবি, মিল থেকে স্বাভাবিক হারে চাল না পাওয়ায় তারা বাধ্য হচ্ছেন বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে। ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ ভোক্তারা।

চালের পাশাপাশি সবজির বাজারেও লেগেছে আগুন। টানা বর্ষার কারণে মাঠে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা ফসল তুলতে পারছেন না ঠিকভাবে। ফলে রাজধানীর বাজারে সরবরাহ কমে গেছে।

গতকাল ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া বেগুন, পটল, ঢেঁড়স, কাঁচা মরিচ ও টমেটো আজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। বিশেষ করে শুক্রবার ভোররাতে কারওয়ান বাজারসহ অন্যান্য পাইকারি বাজার থেকে সবজি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে খুচরা বিক্রেতাদের।

তারা বলছেন, সপ্তাহের শেষে শুক্রবার হওয়ায় সরবরাহ আরও কমে যায়। ফলে দাম বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

বাজারে আসা বেশিরভাগ ক্রেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে চাল-সবজি খাওয়াও বিলাসিতায় পরিণত হবে।

তাদেরেই একজন ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, গত সপ্তাহে মিনিকেট কিনেছি ৭৬ টাকায়। আজ একই চাল কিনতে হচ্ছে ৮২ টাকায়। এটা কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। চালের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে কেজি ১৫০ টাকায় না পৌঁছায় বলে মনে হয় না।

একজন স্কুল শিক্ষিকা দিলরুবা মারজানা বলেন, এক রাতের ব্যবধানে ঢেঁড়সের দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা হয়েছে। প্রতিদিন এমন দাম বাড়লে তো সপ্তাহ শেষে বাজার করার মতো অবস্থা থাকবে না।

গার্মেন্টস কর্মী হেদায়েত উল্লাহ বলেন, তেলাপিয়া কিনেছি ২৫০ টাকায়, গরুর মাংস তো কল্পনাই করতে পারি না। ব্রয়লার মুরগিও আজ ২০০ টাকা। সবজি এখনো নিতে পারিনি, শেষ টাকা দিয়ে মুরগি কিনেছি।

সুরুজ মিয়া একজন সবজি বিক্রেতা। ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকাকে তিনি বলেন, আমরা নিজেরাও তো বেশি দামে কিনে আনছি। ক্রেতারা আমাদের ওপর রাগ ঝাড়েন। কিন্তু আমরা যদি কিছুটা লাভ না করি, তাহলে পরিবার চালাবো কীভাবে?

চাল বিক্রেতা জব্বার আলী বলেন, মিলাররা চাল মজুত করছে। আমাদের কাছে কম দামে বিক্রি করছে না। আমরাও বাধ্য হচ্ছি দামে বাড়াতে।

একেএস/এইউ