নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
আয় ও সম্পদ বৈষম্য কমিয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে মোট রাজস্ব আদায়ে আয়করের হিস্যা বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা বারবার ব্যর্থ হচ্ছি। বিদায়ী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক মোট রাজস্ব আদায়ের বিপরীতে আয়কর খাতের আদায়ের হার বৃদ্ধি না পেয়ে বরং কিছুটা কমেছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আয়কর বিভাগের জুলাই মাসের রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। বোর্ড চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সভায় আয়কর বিভাগের সদস্যগণ, ঢাকাস্থ কমিশনার/মহাপরিচালকগণ, প্রথম ও দ্বিতীয় সচিবগণ (আয়কর বিভাগ) অংশগ্রহণ করেন এবং ঢাকার বাইরের আয়কর বিভাগের কর্মকর্তাগণ জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে যুক্ত হন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এফসিএমএ বকেয়া কর আদায় বাড়াতে সভায় অংশগ্রহণকারী কমিশনারগণকে নির্দেশ দেন। তিনি জোনভিত্তিক আদায়ের অগ্রগতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কমিশনারের থেকে অবগত হন। বকেয়া আদায়ে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা, তা জানতে চান এবং আদায় বাড়াতে করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুসারে আয়কর নথি সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলে ট্রান্সফারে আরও তৎপর হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন। তিনি করদাতাদের হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিতে চলতি মাসের মধ্যেই সকল নথি ট্রান্সফার সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন।
তিনি যেকোনো মূল্যে অডিট সিলেকশনে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের অঙ্গীকার পুনর্ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, অডিট সিলেকশন হতে হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেখানে মনুষ্য কোনো প্রভাব কাজ করবে না। অডিটের উদ্দেশ্য কর আদায় বাড়ানো নয় বরং কর ফাঁকি রোধ করে কর সংস্কৃতির উন্নয়ন এর মূল লক্ষ্য।
টিআইএন থাকা সত্ত্বেও যারা রিটার্ন দাখিল করেন নাই (ননফাইলার) তাদের রিটার্ন দাখিলে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, যারা রিটার্ন দাখিল করেন না তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে জনবলের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে রিটার্ন দাখিল নিশ্চিতের জন্য নির্দেশনা দেন তিনি।
আয়কর আদায় বাড়াতে হলে টিআইএন থাকা সত্ত্বেও যারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না এমন ৭২ লাখ করদাতা এবং রিটার্ন দাখিল করলেও যেসকল করদাতা আয়কর পরিশোধ করছেন না এরূপ প্রায় ৩০ লাখ করদাতা এই ১ কোটি করদাতার নিকট থেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আয়কর আদায় করতে হবে।
২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য আয়কর কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার হোক এই ১ কোটি করদাতা। এছাড়া, জরিপ এবং স্পট এসেসমেন্ট কার্যক্রম জোরদার করে নতুন করদাতা খুঁজে বের করার জন্য চেয়ারম্যান মহোদয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আয়কর বিভাগের সদস্যগণ, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) মহাপরিচালক, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কমিশনার আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সবাই বকেয়া আদায় বাড়ানো, ননফাইলারদের চিহ্নিত করে তাদের কাছ থেকে কর আদায় এবং কর নেট বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এমআর/এমএইচটি