‘মান বজায় রেখে অপারেশন শুরু করার চ্যালেঞ্জ নিতে চাই’

বিমানবন্দরে স্বচ্ছতা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে যাত্রীসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নবনিযুক্ত নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন রাগীব সামাদ। 

তিনি বলেছেন, ‘বিমানবন্দর হলো একটি দেশের প্রতিচ্ছবি। এটি দেখেই একটি দেশ সম্পর্কে ধারণা পান বিদেশিরা। তাই শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে অপারেশন শুরু করার চ্যালেঞ্জ নিতে চাই।’

বুধবার (১৪ মে) বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলামকে বিদায় সংবর্ধনা ও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক এস এম রাগীব সামাদকে স্বাগত জানাতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি)’। সেখানে বেবিচক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। 

রাগীব সামাদ বলেন, ‘এয়ারপোর্ট আমাদের দেশের ইমেজকে ধারণ করে। সেই ইমেজ বাড়াতে এয়ারপোর্টের মানোন্নয়ন জরুরি। সুতরাং এয়ারপোর্টের যে যাত্রীসেবা, আমরা সেটা আরও বাড়াবো। এটি বাস্তবায়নের জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

এসময় বিদায়ী পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বছরে ৮০ লাখ যাত্রীসেবার সক্ষমতা রয়েছে। তারপরও গেল বছর এই বিমানবন্দর দিয়ে রেকর্ড ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছেন। ফলে গেল (২০২৩-২০২৪) অর্থবছরে আয় হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। যা এর আগের (২০২২-২০২৩) অর্থবছরের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি।’

শাহজালাল বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সক্ষমতা বেড়েছে জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার মেয়াদে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছিলাম। ফলস্বরূপ, ৮৫ শতাংশেরও বেশি লাগেজ এখন স্ট্যান্ডার্ড সময়ের মধ্যে (১ ঘণ্টা) যাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, যা স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।’ 
তিনি বলেন, যাত্রীসেবা বাড়াতে যে হটলাইন চালু করা হয়েছিল তাতে এখন যাত্রীদের ছোটখাটো অভিযোগ আর প্রশ্নগুলোর ৯০ শতাংশের নিষ্পত্তিই টেলিফোনে করা সম্ভব হচ্ছে।’

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে সরকার। যা ফ্লাইটের ভাড়া কমাতে সাহায্য করবে এবং অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহনের বাজারকে চাঙ্গা করবে। বর্তমান প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপিতে বিমান পরিবহন খাতের অবদান ৫-৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা বর্তমানে ১ শতাংশেরও কম।’

রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও ২০২৪ সালে এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী চলাচল প্রায় ৭ শতাংশ বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মূল কারণ অভিবাসী কর্মীদের চলাচল। তারা যেন নিজ দেশের বিমানবন্দরে যথাযোগ্য সম্মান ও সেবা পায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। এখনো সেই চেষ্টা চলছে।’

চলতি বছরের ডিসেম্বরে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে যাত্রী সেবার মান ও যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন কামরুল ইসলাম। বিমান পরিবহন খাত সম্পর্কে গঠনমূলক প্রতিবেদনের জন্য গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান তিনি এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

এই সপ্তাহ বিমান বন্দরে কাটিয়েই নিজ বাহিনীতে ফিরবেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল। এর আগে বুধবার এটিজেএফবি বিদায়ী নির্বাহী পরিচালককে সংবর্ধনা ও নতুন নির্বাহী পরিচালককে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানোর আয়োজন করে। সেখানে দুই নির্বাহী পরিচালক কথা বলেন, নিজেদের চ্যালেঞ্জ ও পরিকল্পনাগুলো নিয়ে। 

অনুষ্ঠানে বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম শাহজালাল বিমানবন্দরে তার বিভিন্ন সময়ের অভিজ্ঞতা ও উতরে আসা চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব।

এমআইকে/এএইচ