images

অর্থনীতি

সিগারেটের দাম বাড়লে কমবে ধূমপান প্রবণতা, বাঁচবে ১৮ লাখ কিশোর-তরুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম

সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে তরুণদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা কমে যাবে। এতে প্রায় ১৮ লাখ কিশোর-তরুণ নতুন করে ধূমপানে আসক্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং ২৪ লাখ ৪০ হাজারের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত হবেন বলে দাবি করেছেন সাংবাদিকরা। একইসঙ্গে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় অসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি শলাকা সিগারেটের সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য ৯ টাকা নির্ধারণের দাবি জানান তারা।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে নারী মৈত্রী আয়োজিত “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় অসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেটে তামাকপণ্যের ওপর কার্যকর কর ও মূল্য বৃদ্ধি” শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তারা এ দাবি জানান।

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে সভায় নারী মৈত্রীর কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সংগঠনটির প্রোজেক্ট কোঅর্ডিনেটর নাসরিন আকতার। সভায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রজ্ঞার হেড অব প্রোগ্রামস মো. হাসান শাহারিয়ার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, বাংলাদেশ ফার্স্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোরশেদ নোমান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিউজ এডিটর মো. জাহিদুল ইসলাম, চ্যানেল আইয়ের সিএনই মীর মাসরুর জামান, এপি’র ঢাকা ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তামাকবিরোধী শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. খালেদা ইসলাম, তামাক বিরোধী মায়েদের ফোরামের আহ্বায়ক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব শিবানী ভট্টাচার্যসহ আরও অনেকে।

এসময় দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকরা তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করে ধূমপানের হার কমানোর পক্ষে মত দেন। তারা উল্লেখ করেন, বর্তমানে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দামের পার্থক্য কম থাকায় ভোক্তাদের সহজেই একটি স্তর থেকে অন্য স্তরে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ফলে ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে এই দুটি স্তরকে একীভূত করে মূল্য বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তাই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাংবাদিকরা সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য প্রতি ১০ শলাকার জন্য ৯০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, উচ্চ স্তরের সিগারেটের মূল্য ১৪০ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরের মূল্য ১৯০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিড়ির প্রতি শলাকার মূল্য কমপক্ষে ১ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।

Messenger_creation_15626479-84B4-4960-88DE-D662EAA9638F

বক্তারা বলেন, নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম কাছাকাছি হওয়ায় ভোক্তারা যে কোনো একটি স্তরের সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে দাম বাড়ালে স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠী এবং তরুণ প্রজন্ম ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে।

গবেষণা অনুযায়ী, তামাক পণ্যের বিদ্যমান কর কাঠামোর সংস্কার করা হলে ধূমপানের হার ১৫.১ শতাংশ থেকে কমে ১৩.৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এর ফলে প্রায় ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান ছেড়ে দেবে এবং প্রায় ১৮ লাখ কিশোর-তরুণ নতুন করে ধূমপানের অভ্যাস গড়ে তোলা থেকে বিরত থাকবে। পাশাপাশি, সরকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করতে পারবে, যা জনস্বাস্থ্য ও জাতীয় অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এসএইচ/ইএ