images

অর্থনীতি

চালের দাম নিম্নমুখী, বলছে খাদ্য অধিদফতর

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:৩১ পিএম

দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের যৌথ টিম। তাদের মনিটরিং ও অভিযানের ফলে চালের দাম বর্তমানে নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মনিটরিং শেষে উপস্থিত সংবাদিকদের এ কথা জানান খাদ্য অধিদফতরের অতিরিক্তি পরিচালক সেলিমুল আজাম। এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কুল প্রদীপ চাকমা।

অভিযান শেষে সেলিমুল আজাম বলেন, আমরা গত ১৫ জানুয়ারি থেকে বাজার মনিটরিংয়ে নেমেছি। এরপর থেকে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থার দিকে যাচ্ছে বলে আমাদের ধারণা। গত ১৬ তারিখে আমরা আমরা বাবু বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম। সেখানে কেজি প্রতি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৭০ টাকা। আজ কারওয়ান বাজারে আমরা ৬৬-৬৭ টাকা দেখেছি। এতে চালের বাজার নিম্নমুখী বলে আমরা মনে করছি।

প্রয়োজনের আইন প্রয়োগ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন প্রায় সব বাজারেই যাচ্ছি এবং মনিটরিং করছি। এখন আমাদের অভিযান মোটিভিশন পর্যায়ে আছে। আমরা খুচরা ও পাইকারি দোকানদারদের সতর্ক করছি। ধীরে ধীরে আমরা হয়তো আইন প্রয়োগ করব। তখন প্রয়োজনে আমরা জরিমানা বা শাস্তির দিকে যাব।  

এর আগে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কুল প্রদীপ চাকমার নেতৃত্বে কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি দোকান ঘুরে দেখেন। তারা দোকানগুলোতে মূল্যতালিকার সাথে বিক্রয় মূল্য ঠিক আছে কিনা, চালের কোয়ালিটি, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দামের পার্থক্য যাচাই করেন। এ সময় কর্মকর্তারা দোকানিদের ফুড লাইসেন্স ও এর মেয়াদ রয়েছে কিনা তা যাচাই করেন। প্রয়োজন সাপেক্ষে ব্যবসায়ীরে সতর্ক করেন। 

চালের ট্যাগ ও একাধিক ধরনের উল্লেখ নেই

খাদ্য কর্তৃপক্ষের মনিটরিংকালে কোনো দোকানেই প্রদর্শন করা চালে কোনো প্রকার ট্যাগ দেখা যায়নি। ফলে প্রদর্শন করা চাল কোন জাতের তা ক্রেতার অভিজ্ঞতা ও বিক্রেতার মুখের কথা ছাড়া নির্ধারণের কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় ক্রেতারা বিভ্রান্ত হতে পারে উল্লেখ করে ট্যাগ লাগানো নির্দেশ দেন অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা। এ সময় চাল প্রদর্শনে বাটি কিনতে পারলে, কাগজে ট্যাগ লাগাতে সমস্যা কোথায় জানতে চান তারা।

এদিকে মূল্য তালিকায় নির্দিষ্ট জাতের চালের একটি দাম উল্লেখ করলেও কোয়ালিটি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রয় করতে দেখা গেছে। দামের পার্থক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবাসায়ীরা জাত একই হলেও কোয়ালিটি ও মিলের দামের কথা জানান। এ অবস্থায় অভিযান পরিচালনাকারী দল এ ধরনের ঘটনায় আলাদা আলাদাভাবে মূল্য তালিকায় দাম উল্লেখের নির্দেশ দেন। 

এছাড়াও অভিযানকালে অনেক দোকানের ফুড লাইসেন্স মেয়াদ উত্তীর্ণ দেখা যায়। খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের লাইসেন্স নবায়নের পরামর্শ দেন। 

অতিরিক্ত লাভ না করার পরামর্শ

অভিযান পরিচালনাকালে জার জার স্টোরে চালের বিক্রয় মূল্যে অধিক লাভ করার প্রমাণ পায় কর্মকর্তারা। দোকানটি ৫৫ টাকা কেজি দরে আটাশ চাল কিনে ৫৮ টাকায় বিক্রয় করছে। তবে তারা দূরের কোনো পাইকার থেকে না কিনে পাশের দোকান থেকে চাল সংগ্রহ করেছে। এ সময় অতি লাভ করছেন কিনা জানতে চাইলে, লেবার খরচের কথা উল্লেখ করেন দোকানী। এতে বস্তাপ্রতি ১০ টাকা লেবার খরচের কথা জানান তিনি। 

এছাড়াও দোকানী জনতা রাইস এজেন্সি থেকে চাল ক্রয়ের কথা জানান। যদিও ওই পাইকারি দোকানে আটাশ চালের কেজি ৫২ টাকা উল্লেখ করা রয়েছে। তবে দোকানীকে নিয়ে জনতা রাইস এজেন্সিতে গেলে তারা ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রয়ের কথা জানায়। একইসঙ্গে আটাশ হলেও এটি উন্নতমানের উল্লেখ করে। এ অবস্থায় খাদ্য কর্তৃপক্ষ জারজার স্টোরকে অধিক লাভ না করা ও জনতা রাইস এজেন্সিকে মানের উপর ভিত্তিতে মূল্য তালিকা প্রদর্শনের জন্য সতর্ক করে। 

এমএইচ/এএস