images

অর্থনীতি

শুক্রবারে তেজ বাড়ে বাজারে!

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৩১ পিএম

শুক্রবার! চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের বাজার করার দিন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ধুম পড়ে মাছ-মাংস আর সবজি কেনার। যদিও অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার তেজ বাড়ে নবাবগঞ্জ বাজারে। 

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) নিউমার্কেট বনলতা কাঁচা বাজার, নবাগঞ্জ বাজারসহ হাতিরপুলের অন্তত ১০ জন ক্রেতা ও বিক্রেতার সাথে কথা বলে মিলেছে এমন তথ্য। 

বিক্রেতারা বলছেন, শুক্রবার যেকোনো দিনের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকে। মালও বেশি আসে। তাও চাহিদার তুলনায় কমই। যে কারণে দাম বাড়ে। মাঝে মধ্যে কমেও, তবে তা খুব কমই হয়ে থাকে। 

অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, চাহিদা ঘিরে ব্যবসায়ীরা যেন ফাঁদ পাতে। নেয় নানা কৌশল। এদিন প্রতিটি পণ্যেরই কেজিতে দাম বাড়ে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। যার সত্যতাও মিলেছে গত দুই দিনের বাজারদর পর্যালোচনায়। 

তিনটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, দামে রয়েছে বিস্তর ফারাক। এর মধ্যে তুলনামূলক কিছুটা কমে সবজি মিলছে নিউমার্কেট কাঁচা বাজার এবং নবাবগঞ্জ বাজারে। এ দুই বাজারের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে হাতিরপুল বাজারের বিক্রিতাদের। 

এই তিনিটি বাজারে গোল বেগুন ৯০ থেকে ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৭০ থেকে ২০০ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কচুমুখী ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স-পটল-চিচিঙা-ঝিঙা-কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ও টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সবজির দাম আকাশছোঁয়া, স্বস্তি নেই মাছ-মুরগিতেও

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাঝারি আকৃতির রুই মাছ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। বড় আকৃতির মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে। এ সময় অন্য মাছের দামও চড়া দেখা গেছ। ২০০ টাকার মধ্যে মিলছে পাঙ্গাস মাছ।

মুরগির বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল কক বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। 

নবাবগঞ্জ বাজারের মুরগি দোকানি রহিম জানান, বৃহস্পতিবার রাতেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি ১৮০ টাকায়। আজ বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা দরে। পুরান মাল নতুন দামে বিক্রি করার কারণ জানতে চাইলে এ বিক্রেতা বলেন, নতুন মালও আসছে। নতুন কেনা দাম বেশি, তাই বিক্রিও বেশি। শুক্রবার তো, আগামীকাল আবারও দাম পড়ে যাবে। 

নিউমার্কেট বনলতা মার্কেটের মাছ বিক্রেতা বাবু জানান, দাম বেশি সবসময়ই শুনতে হয় আমাদের। আজকে শুক্রবার সেটাও তো মাথায় রাখতে হবে। আজকের মাল, একের মাল। শুক্রবারে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, চাহিদা বেশি, দামতো বাড়বেই। এদিন সবাই টাকা নিয়েই বাজারে আসে, খালি ব্যাগ নিয়ে কেউই ফেরত যায় না। আমরা বিক্রি করি, সাপ্লাইয়ারা ঠিক মতো সাপ্লাই দিলে ‘বাড়তি দাম’ ‘বাড়তি দাম’ আর শুনতে হতো না বলে মত এই বিক্রেতার।  

হাতিরপুল বাজারে মাংস বিক্রেতা নাম না জানিয়ে বলেন, আমাদের এই বাজারের একটা বদনাম আছে, এখানে সব কিছুর দাম বেশি। বাজার যাচাই করে দেখেন, সবখানে মাংস যে দাম এখানেও একই দাম। অলিগতির দোকানের মাংস আর এখানের মাংসের কোয়ালিটি (মান) আকাশ-পাতাল পার্থক্য বলে দাবি তার। 

নিউমার্কেট বনলতা মার্কেটে সপ্তাহের বাজার করতে আসা মাহমুদুল নামে এক ক্রেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, ইচ্ছে থাকলেও সপ্তাহের অন্য দিনে বাজার করার সময় সুযোগ হয় না। বউ কিংবা আমাকে থাকতে হয় অফিসে। শুক্রবার সকালের দিকটাকে বাজারের জন্য ঠিক করে রাখছি। শনিবার পরিবারকে সময় দেই। পরদিন থেকে শুরু হয় আবারও ব্যস্ততা। দাম নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, দাম যা চায় তাই দিতে হয়। আমরা বাধ্য। অপশন নেই। তদারকি না থাকলে যা হয় আরকি। 

ডিএইচডি/এইউ