জেলা প্রতিনিধি
১৩ জুন ২০২৩, ০৩:০০ পিএম
কোরবানির ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে পশু বিক্রি। বাহারি নাম ও মোটা তাজা গরুর জন্য রয়েছে আলাদা কদর। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ১ টনের কালুকে কিনলে খাসি ফ্রি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গরুর মালিক।
কালুর ওজন এক টন আর চান্দুর ওজন ২৩ মণ। চার বছরের কালুর দাম ১১ লাখ আর তিন বছরের চান্দুর দাম ৮ লাখ। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কোরবানির বাজার ধরতে বিশালদেহী এই দুটি ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন সিদ্দিক মীর নামের এক খামারি।
উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের থঞ্জুপাড়া গ্রামের কৃষক সিদ্দিক মীরের এই শাহিওয়াল ও হলেস্টেইন জাতের দুই ষাঁড় কালু ও চান্দুকে দেখতে প্রতিদিন ক্রেতারা আসছেন তার বাড়িতে। কালুকে কিনলে সঙ্গে একটি খাসি উপহার দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন এই খামারি।
সিদ্দিক ২০১৯ সালে ৮৩ হাজার টাকায় কালু ও একটি গাভি কেনেন পালনের জন্য। তার পর থেকেই প্রতিবছর একটি করে বাচ্চা দেয় গাভিটি। কালু-চান্দু ছাড়াও তার খামারে রয়েছে আরও দুটি ষাঁড় ও একটি গাভি। ষাঁড় দুটি পরবর্তী বছরের জন্য প্রস্তুত করছেন তিনি।
সিদ্দিক মীর পেশায় একজন কৃষক। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ৪ বছর আগে থেকে পালন শুরু হয় একটি এবং তিন বছর আগে থেকে শুরু হয় আরেকটি ষাঁড়। বর্তমানে তাদের প্রতিদিন খাবার লাগে প্রায় হাজার টাকার। এখন পর্যন্ত তিনি এদের পেছনে খরচ করেছেন প্রায় দশ লাখ টাকা। তবে কালু-চান্দুর খাবারের মেন্যুতে তেমন রাজকীয়তা নেই। কারণ বাণিজ্যিকভাবে নয়, তিনি এদের পালন শুরু করেন শখের বসে।

এখন তাদের নিয়মিত খাবারের মধ্যে থাকে খড়, ভুসি ও ভুট্টার আটা, চালের খুদ ও ছোলা বুটসহ অন্যান্য সাধারণ মাঠের ঘাসপাতা। তবে কালু-চান্দুর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য খেয়াল রাখছেন সিদ্দিকের পরিবারের সবাই। সারাক্ষণ মাথার ওপরে ফ্যান, দৈনিক ২-৩ বার গোসল করানো সব মিলিয়ে তাদের সেবা-যত্নে ত্রুটি রাখেন না বাড়ির লোকজন।
সিদ্দিক মীর আরও বলেন, কালুকে কেউ কিনলে তার সঙ্গে একটি খাসি ফ্রি দেব। তবে চান্দুর সঙ্গে কিছু ফ্রি নেই। শখের বসে পালন শুরু করে আজ আমি সফলতা পেয়েছি। এখন কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে আমি সার্থক।
সিদ্দিক মীরের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বিশালদেহী ষাঁড়টি সামলে রাখা খুবই কষ্টকর। অনেক পরিশ্রম করে আমরা এগুলো বড় করেছি। এ অঞ্চলে এত বড় গরু আর নেই। এজন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত লোকজন আমাদের কালু-চান্দুকে দেখতে আসেন। তবে এখন ওদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন তাই গোয়ালঘর থেকে বেশি নামানো হয় না।
মাহবুব নামের এক প্রতিবেশ বলেন, আমরা অত্র এলাকায় এরকম ষাঁড় আর দেখিনি। গত কয়েক বছরেও এই এলাকায় তৈরি হয়নি, তাই বেশ ভালো লাগছে এবং অনেক লোক এগুলোকে দেখতে এসেছে। আমরা প্রতিবছর বাজারে এত বড় ষাঁড় এলে দেখতে যেতাম কিন্তু এখন নিজের এলাকায় দেখছি।
কলাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গাজী শাহ আলম ঢাকা মেইলকে বলেন, কৃষক সিদ্দিকের এই ষাঁড় দু’টি উপজেলার মধ্যে অন্যতম। তার পরিশ্রমকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাকে অনুসরণ করে যারা পশুপালনে আগ্রহী হচ্ছে তাদেরকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি। এ বছর উপজেলায় সর্বমোট কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৯৮২টি পশু।
প্রতিনিধি/এসএস