জেলা প্রতিনিধি
০৮ জুন ২০২৩, ০৮:২৫ পিএম
অধিকার আদায় ছাড়াও প্রত্যাবাসনের দাবিতে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গা নেতারা। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘দ্রুত প্রত্যাবাসন’ ক্যাম্পেইন শেষে পৃথকভাবে এসব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশগুলোয় ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ছাড়াও নানা স্লোগানে অংশ নেন রোহিঙ্গারা। সেই সঙ্গে নিজ দেশ মিয়ানমারের নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে যাওয়াসহ নাগরিকত্বের স্বীকৃতি, নিরাপত্তা এবং অন্য জাতিগোষ্ঠীর লোকজন যেভাবে অবাধে চলাফেরা করে, ঠিক তেমনি স্বাধীনতা পাওয়ার দাবি জানান।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সমাবেশ উপলক্ষে টেকনাফের লেদা, জাদিমুড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সকাল থেকেই লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী-শিশুরাও ছিলেন। সবমিলিয়ে এ দিন এসব এলাকা ছাড়াও কুতুপালং, বালুখালী, লম্বাশিয়ায়ও একই ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি সমাবেশেই পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি জানান।
রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশগুলোয় হাজার হাজার রোহিঙ্গা অংশগ্রহণ করেন। যেখানে রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় ও প্রত্যাবাসনের দাবিতে সোচ্চার শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে দ্রুত নিজ দেশে (মিয়ানমারে) ফিরে যেতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা দাবি করে টেকনাফের জাদিমুড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা বজলুল রহমান বলেন, ‘আমরা আর বাংলাদেশে থাকতে চাই না। দ্রুত নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, চলাচলের স্বাধীনতাসহ নিজ গ্রামে ভিটেমাটি ফেরত দিলে আমরা এই মুহূর্তেই চলে যাব মিয়ানমারে।’
এছাড়া আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘আমরা আর শরণার্থী জীবন চাই না। সামনের দিনগুলোতে আমরাও আমাদের জন্মভূমি আরাকানে জীবনযাপন করতে চাই। বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যেন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়।’
সার্বিক বিষয়ে কথা হলে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ-সচিব) খালিদ হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোয় রোহিঙ্গারা দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। সেখানে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে রোহিঙ্গারা কয়েকটি দাবি তোলেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। ওই সময় জীবন বাঁচাতে পালিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। যেখানে আগে থেকেই কয়েক লাখ নিপীড়িত রোহিঙ্গা ছিল।
প্রতিনিধি/আইএইচ