জেলা প্রতিনিধি
২৭ মে ২০২৩, ০১:৩৩ পিএম
রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে গত ৩ বছর আগে। তবুও এভাবেই ঝুলছে প্রশাসনিক ভবন, অডিটোরিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভবনের দেয়ালে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে এ বিষয়ে কিছুই বলার নেই বলে জানিয়েছেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সম্প্রতি, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, ঢাকার বঙ্গবাজারে বড় বড় অগ্নি দুর্ঘটনার পরও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এরূপ নাজুক অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় জনমনে। যে কোনো সময় অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনায় ক্ষতি হতে পারে অপূরণীয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, অডিটোরিয়াম বিভিন্ন অনুষদ, একাডেমিক ভবন, বিভিন্ন দপ্তর, অডিটোরিয়াম বা গ্যারেজের মতো জনবহুল জায়গাগুলোতে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে একমাত্র ভরসা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোই পড়ে আছে মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায়। এমন কি প্রশাসন ভবন ও সংলগ্ন গ্যারেজে লাগানো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রে দেখা মেলেনি রিফাইল ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখও।
কোনো ভবনের অগ্নি ঝুঁকি প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রসঙ্গে রুয়েটের নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. কামরুজ্জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, দেশে এখন যে হারে অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে তাতে আমরা শঙ্কিত। আমরা সবসময় সাজেস্ট করি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাটা প্রত্যেক বিল্ডিংয়ে করা অবশ্যই দরকার। দেশে এখন যে অবস্থা তাতে যে কোনো সময় যে কোনো জায়গায় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। তার কোনো প্রিপারেশন আমাদের নাই।
রুয়েটের মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত। আমি যখন বিভাগীয় প্রধান ছিলাম তখন আমি গোটা প্রত্যেকটা বিল্ডিংয়ে ফায়ার এক্সটিংগুইশারের ব্যবস্থা করি। সেই জিনিসগুলো ওইভাবেই থেকে গেছে। কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। রুয়েট প্রশাসনও একই অবস্থা হয়ে গেছে। ওইভাবে থেকে গেছে, ৬ মাস পরপর যে আপডেট করতে হবে সেটা কেউ করে নি এখনও। এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক।
রুয়েটের শিক্ষার্থী দেবপ্রিয় গুহ ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের পরিবেশটা এমনভাবে করা সেখানে আগুন লাগার চান্স নেই। তবুও প্রস্তুতি রাখাই লাগবে। তবে মেয়াদোত্তীর্ণের বিষয়টি চিন্তার ব্যাপার।
এ ব্যাপারে রুয়েটের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের সব ভবনেরই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা আছে। সংখ্যাগুলো তো এই মুহূর্তে বলা মুশকিল। আপনি আসলে দেখে বলা যাবে। সিভিল পার্টটা আমারই দায়িত্বে, তবে এখানে মেকানিক্যাল পার্ট আছে, ফায়ার ফাইটিং পার্ট আছে, ইলেক্ট্রিক্যাল পার্ট আছে সবগুলোতে আলাদা আলাদা ইঞ্জিনিয়ার আছে, ওভারঅল আমারই দায়িত্ব। প্রজেক্টের ক্ষেত্রে পিডি স্যার সব দেখভাল করে।
অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র তদারকির ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের বিল্ডিংগুলোর কাজ তো শেষ হয়নি। আর রিফাইল করা হয়নি, আমাদের বাজেটে ৫ লাখ টাকা ছিল। একবার মনে হয় শুধু ফায়ার এক্সটিংগুইশার কেনা হয়েছিল। একবারই কেনা হয়েছে। যেগুলো অডিটোরিয়াম, প্রশাসনিক ভবনসহ অন্য কিছু ভবনেও আছে। বছর দুয়েক আগে কেনা হয়েছিল, সংখ্যাটা দেখে বলতে হবে কতগুলো কেনা হয়েছিল। আমাদের উপাচার্য স্যার না থাকার কারণে কোনো টেন্ডার বা কোনো কিছুই করতে পারছি না আর কি।
ঝুঁকির প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ওভাবে চিন্তা করলে ঝুঁকি তো থাকবেই। নতুন ভিসি স্যার আসলে বাজেটের মাধ্যমে দ্রুতই রিফাইল করা হবে।’
এ বিষয়ে রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মো. সাজ্জাত হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারি না।
টিবি