জেলা প্রতিনিধি
১৪ মে ২০২৩, ০১:৩৭ পিএম
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের উপকূলীয় জেলা জেলা বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদী ক্রমে উত্তাল হতে শুরু করেছে।
রোববার (১৪মে) বেলা ১২ টার দিকে বাতাসের গতি ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে যার জন্য নদী গুলো উত্তাল হতে শুরু করেছে। ঘূর্নিঝড় মোখার প্রভাবে সকাল থেকেই মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু পড়ছে। বরগুনা ৮ নং বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস।
বরগুনার পায়রা নদী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পায়রা নদী ক্রমেই উত্তাল হচ্ছে বড় বড় ঠেউ এসে নদীর তীরে আছড়ে পরছে। পন্যবাহী বড় বড় জাহাজ নদীতে নোঙ্গর করা আছে।এখানকার জন মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে তবে অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে না গিয়ে বাড়িতেই আছেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বরগুনা জেলায় মোট ৬৪২ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত । এসবের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১৮৫ টি, আমতলীতে ১১১ টি, তালতলীতে ৫৩ টি, পাথরঘাটায় ১২৪ টি, বেতাগীতে ১১৪ টি এবং বামনায় ৫৫ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫১০ জন আশ্রয় নিতে পারেন।
এছাড়াও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি জরুরি সাড়াদান কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।। পাশাপাশি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা পৌছাতে এলাকায় এলাকায় মাইকিং প্রচার চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহওয়া অফিস এর সর্বশেষ তথ্য মতে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মুল আঘাত হানেবে টেকনাফের ৫০-৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে মিয়ানমার উপকূলে। এই ঘূর্ণিঝড়টি দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল তিনটার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে।
বরগুনা সদর উপজেলার ৬ নং বুড়িরচর ইউনিয়নের বুড়িরচর গ্রামের বাসিন্দা লিপি বেগম বলেন, মোগো ঘর বেড়িবাধের বায়রায়। পেত্তেক বচ্ছর বইন্নার সামনে মোরা পরি দুইবার বইন্নায় ঘর বাড়ি সব নদীতে লইয়া গেছে।
আশ্রায় কেন্দ্রে যান নি ক্যানো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এহনও তেমন বেশি বইন্না শুরু অয় নাই। আর ঘর,হাস- মুরগি,গরু ছাগল রাইখা যাইতে মন চায় না।
পুরাকাটা ফেরিঘাটের ব্যাবসায়ী শফিক বলেন , সকাল থেকে নদী নিবর ছিলো তবে ১২ টার পর থেকে পায়রা নদী উত্তাল। ফেরিচলাচল ও খেয়া পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ বাংলাদেশ সম্পুর্ন অতিক্রম না করা পর্যন্ত মনে আতঙ্ক বিরাজ করবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি অগ্রভাগ কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হেনেছে। বরগুনা উপকূলীয় জেলা হওয়ায় আমরা ঝুকিতে রয়েছি। তাই ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি। দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ২৯৪ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য মজুদ রাখা হয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি ত্রান বাবদ ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এবং ১৪২ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণ ব্যায় বাবদ ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা, ২ হাজার কম্বল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ রয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি