জেলা প্রতিনিধি
১৪ মে ২০২৩, ১১:৫৬ এএম
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া না থাকায় ভোলার আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে চলে যাচ্ছেন চরাঞ্চলবাসী। জোর করেও তাদেরকে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
রোববার (১৪ মে) সকাল থেকে তড়িঘড়ি করে আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে বসতবাড়িতে চলে যাচ্ছেন চরাঞ্চলবাসী।
এদিকে, জেলায় সকাল থেকেই কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। দেখা মেলেছে রৌদ্রের। নেই বাতাসের তীব্রতাও। স্বাভাবিক রয়েছে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর পানি।
ভোলা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রিপন কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার রাতে জেলার বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। রাতে তাদেরকে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে জেলায় গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হলেও রোববার সকাল থেকে ভোলার আবহাওয়া অনেকটা ভালো রয়েছে। কোনো বৃষ্টিপাত কিংবা ঝড় নেই। বৈরী আবহাওয়াও নেই। তাই আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষজন তাদের বসতভিটায় ফিরে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব শুরু হলে যারা আশ্রয় কেন্দ্র থেকে চলে গেছে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। এছাড়াও জেলা প্রশাসক ও প্রশাসন ঘূর্ণিঝড়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ভোলার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা চরফ্যাশন। এ উপজেলাটি বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী এলাকায়। সেখানকার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন ঢাকা মেইলকে জানান, শনিবার রাতে চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। রোববার সকালে আবহাওয়া ভালো থাকায় তড়িঘড়ি করে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে সকলেই চলে গেছে। বৈরী আবহাওয়া দেখা দিলে পুনরায় তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।
তিনি আরও জানান, চরফ্যাশন উপজেলার দুর্গম চরগুলোর মধ্যে চর পাতিলায় বসবাস করা মানুষজন চর কুকরি-মুকরির আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ আবার তাদের আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও ঢালচর ও চর নিজামের মানুষদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য দুইটি বাল্কহেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব শুরু হলে বাল্কহেড দিয়ে চরাঞ্চলের মানুষদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।
তজুমদ্দিন উপজেলার দুর্গম চর চরজহির উদ্দিনে থাকা কোনো মানুষই রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে আসেনি। চরজহির উদ্দিন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সুশীল এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঢালচর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আশ্রাফুর রহমান জানান, শনিবার রাতে ঢালচরের প্রায় ছয়শো মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে। সকালে আবহাওয়া ভালো থাকায় তারা তাদের বাড়িতে ফিরে গিয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার আবহাওয়া ভালো থাকতে পারে। দুপুর পর্যন্ত জেলায় বৈরী আবহাওয়া না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকবে। রোববার বিকেলের দিকে জেলায় ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে পারে। জেলায় এখনো ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলমান রয়েছে।
টিবি