জেলা প্রতিনিধি
১৪ মে ২০২৩, ১১:৪২ এএম
বরগুনার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে আকাশ মেঘে ছেয়ে গেছে। পুরো উপকূল জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এই কারণে উপকূলবাসীর মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রোববার (১৪ মে) ভোর রাত থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও দমকা হাওয়া বইছে। সকাল ৯টা থেকে মাঝে মাঝে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পায়রা নদী ও বিষখালী নদী শান্ত থাকলেও সাগর কিছুটা উত্তল রয়েছে। বরগুনাতেু ৮ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস।
জানা গেছে, এ ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় বরগুনা জেলায় মোট ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসবের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১৮৫টি, আমতলীতে ১১১টি, তালতলীতে ৫৩টি, পাথরঘাটায় ১২৪টি, বেতাগীতে ১১৪টি এবং বামনায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫১০ জন আশ্রয় নিতে পারবেন।
দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ২৯৪ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য মজুদ রাখা হয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি ত্রাণ বাবদ ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এবং ১৪২ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণ ব্যয় বাবদ ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা, ২ হাজার কম্বল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ রয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি জরুরি সাড়াদান কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা পোঁছাতে এলাকায় এলাকায় মাইকিং প্রচার চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহওয়া অফিস এর সর্বশেষ তথ্য মতে, রাত ৩টা নাগাদ ঘুর্ণিঝড় মোখার অগ্র ভাগ উপকূলে ঠুকেছে। এবং দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড় মোখা।
বরগুনা সদর উপজেলার ৬ নম্বর বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা আলমগীর ফকির বলেন, পানির চাপে ২০০৭ সালের সিডরে বেড়িবাঁধ ভেঙে অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল। এখন পানির যেভাবে চাপ দেখা যায়, তাতে আমরা আতঙ্কিত।
বরগুনা পৌরসভার চরকলেনি নিবাসী মিরাজ মীর বলেন, আগে ঘূর্ণিঝড় কিংবা বন্যা হলে তার প্রভাব দুই তিন দিন আগে থেকেই পড়া শুরু হতো। কিন্তু এই বারের ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টা সম্পূর্ণ আলাদা এত বড় একটা ঘূর্ণিঝড় কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে কোনো প্রভাব পরেনি। অনেক আতঙ্কে আছি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বরগুনা উপকূলীয় জেলা হওয়ায় আমরা ঝুঁকিতে রয়েছি। তাই ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি। বরগুনা আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে শিগগিরই তা সংস্কার করা হয়ে।
টিবি