জেলা প্রতিনিধি
১৩ মে ২০২৩, ০৯:৫৬ এএম
ঘূর্ণিঝড় মোখা ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় চাঁদপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জসহ সব রুটের লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (১২ মে) রাত সোয়া ১০টা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) চাঁদপুর।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন।
মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় মোখা ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় এবং এর তীব্রতা বাড়তে থাকায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ৮ নম্বর মহা বিপৎসংকেত জারি করেছে। ৮ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের মানে হচ্ছে বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বামদিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
তিনি আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিএ পরিচালকের (নৌ-নিট্রা) নির্দেশে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা-চাঁদপুর, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা চাঁদপুর ভায়া শরিয়তপুর, মজু চৌধুরীর হাট (লক্ষ্মীপুর)-ইলিশা ঘাট (ভোলা) নৌপথের সকল ধরনের লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে চাঁদপুরগামী লঞ্চের যাত্রী শহরের পুরান বাজারের বাসিন্দা ও গণমাধ্যম কর্মী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাত ১১টায় চাঁদপুরে আসার উদ্দেশে সদরঘাটে আসি। কিন্তু ঘাট থেকে চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব লঞ্চ রাত ৯.৪০ মিনিটের পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ-এর দায়িত্বরত লোকজন। যার ফলে ঘাটে আসা শত শত লঞ্চ যাত্রীকে ফিরে যেতে হয়েছে।’
নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. কামরুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার সার্বিক পরিস্থিতি দেখে নৌ পুলিশের প্রত্যেক থানা ও পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা সক্রিয়ভাবে লঞ্চঘাট ও উপকূলীয় এলাকায় প্রস্তুত রয়েছে। একই সঙ্গে লঞ্চ ও ছোট নৌযান নিরাপদে থাকার জন্য সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘূর্ণিঝড়ের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি নম্বর ১২-এ বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শনিবার সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল হিসেবে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।