জেলা প্রতিনিধি
০১ মে ২০২৩, ০৪:৫৫ পিএম
এখন আর আশা নাই। তারপরও প্রতিদিন মিল গেটে আসি। পুরানো দুই-চারজনের সঙ্গে দেখা হয়। সবাই তো চলে গেছে। আমরা কয়জন পড়ে আছি। ১৫-২০ বছর কাজ করছি; একটা মায়া হয়ে গেছে। তাই কষ্ট হলেও কোথাও যেতে পারি না। কিছু কাজকর্ম করে দিন চালাচ্ছি। কষ্ট নিয়েই বেঁচে আছি।’
প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিল গেটে শনিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কথাগুলো বলছিলেন পাটকল শ্রমিক আবুল বাশার (৪৩)। প্রায় তিন বছর আগে আরও কয়েক হাজার শ্রমিকের সঙ্গে তিনিও কর্মহীন হয়েছিলেন। অল্পদিনের স্থায়ী চাকুরিতে যে পাওনা পেয়েছিলেন তার কিছুই জমা নেই। নিত্যপণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাওয়া বাশারের এখন আয়ের উৎস শুধু দিন মজুরি।
শুধু আবুল বাশারই নন, খুলনায় একের পর এক সরকারি-বেসরকারি পাটকল, শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ায় শিল্পাঞ্চলখ্যাত খালিশপুর, দৌলতপুর, আফিলগেট, ইস্টার্ণগেট, রূপসা এলাকা অনেকটাই ফাঁকা। কাজ না থাকায় অধিকাংশ শ্রমিক পরিবার এলাকা ছেড়েছেন। কেউ কেউ পেশা পাল্টে নতুন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আবার কেউ স্থানীয়ভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসা বা দিনমজুরি করে জীবন নির্বাহ করছেন। ফলে ‘মে দিবস’ ঘিরে খুলনা অঞ্চলের শ্রমিকদের উচ্ছ্বাস থমকে গেছে। এমন অবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিবস।
জুটমিল শ্রমিক অলিয়ার রহমান ও হাফিজুর রহমান বলেন, গত ২০২০ সালের ২ জুলাই সরকার ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত বা পাটকল একযোগে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সরকার দুই মাসের ভেতরে শ্রমিকের সব পাওনা পরিশোধ ও তিন মাসের মধ্যে বন্ধ মিলে উৎপাদন চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ৩২ মাস হয়ে গেলেও স্থায়ী শ্রমিকের সঞ্চয়পত্র ও অনন্য পাওনা পরিশোধ হয়নি। শ্রমিকরা বেকার হলেও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা বহাল রয়েছে।
তারা জানান, বিশেষ করে খালিশপুর, দৌলতপুর, জাতীয়, কেএফডি ও আর আর জুটমিলের অনেক স্থায়ী শ্রমিকের সঞ্চয়পত্র, ঈদের বোনাস, ছুটির পাওনা, শিক্ষা ভাতা জোটেনি। তারা কষ্টের মধ্যে জীবন-যাপন করছে। এই অবস্থায় আমরা তো মে দিবস ভুলে গেছি।
প্রতিনিধি/ এজে