images

সারাদেশ

‘কুলিগিরি’ করতে চায় না কেউ

জেলা প্রতিনিধি

০১ মে ২০২৩, ১০:০৩ এএম

পদ্মা সেতুর চালু হওয়ার পর থেকে বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় আয় কমেছে নদীবন্দরের কুলিদের (ঘাটশ্রমিক)। ফলে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অটোরিকশা ও রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে বরিশাল নদীবন্দরে গিয়ে সেখানকার ঘাটশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

বরিশাল নদীবন্দরের নিবন্ধিত ঘাটশ্রমিক ইসমাইল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে এই ঘাটে কুলির কাজ (কুলিগিরি) করছেন। কিন্তু গত এক বছরে আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এর একমাত্র কারণ পদ্মা সেতু চালু। যাত্রীরা এখন অনেকেই অল্প সময়ে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াতের জন্য সড়ক পথ বেছে নিচ্ছেন।

ইসমাইল বলেন, আগে এমন দিন গেছে যে প্রতিদিন ১২শ থেকে ১৪শ টাকা পর্যন্ত ইনকাম হয়েছে। আর এখন ৫শ টাকাই ইনকাম করা কষ্ট। কেউ আর এ পেশায় থাকতে চায় না। এ অবস্থায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে না পেরে অন্য কাজ করছেন।

আরেক ঘাটশ্রমিক হাফিজুল বলেন, যাদের পরিবার আছে তারা আর এ পেশায় থাকতে চাইছে না। কারণ আগের মতো এখন আর ইনকাম নাই। কিন্তু খরচ আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগে হাজার টাকা ইনকাম হলেও এখন ৩-৪শ টাকা আয় করতে দিন শেষ হয়ে যায়। তাই অনেকেই অটোরিকশা চালাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল নদীবন্দরে নিবন্ধিত পঞ্চাশজনের বেশি ঘাটশ্রমিক ছিল। কিন্তু যাত্রী সঙ্কটের কারণে ইনকাম কমে যাওয়ায় এখন ২০-২৫ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছেন। বাকিরা অন্য জায়গায় গিয়ে যে যার পছন্দমতো কাজ করছেন। অনেকেই অটোরিকশা চালাচ্ছেন বলে জানা যায়।

নদীবন্দরের আরেক ঘাটশ্রমিক বেল্লাল বলেন, ঈদের আগ পর্যন্ত অনেকটা মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়েছে। ঈদের দুইদিন আগে থেকে যাত্রী আসায় কিছুটা ইনকাম বেড়েছে। এখনও অনেকে ঢাকায় যাচ্ছে, তাই ঘাটে কিছু ইনকাম হচ্ছে।

বেল্লাল আরও বলেন, যাত্রী চাপ হয়তো আর দুই-চার দিন থাকবে। তারপর আবারও মানবেতর জীবন-যাপন করতে হবে। অবস্থা এমন যে মাঝে মাঝে চা-রুটি খেয়ে ঘাটেই শুয়ে থাকি।

অধিকাংশ কুলিরা ঢাকা মেইলকে জানান, তাদের খাওয়া খরচ ও বাসাভাড়া বেড়েছে। ঈদের সময় বাড়তি খরচ থাকে। কিন্তু এখন যে আয় তা দিয়ে পরিবারের বাড়তি খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হয়।

প্রতিনিধি/এইচই