images

সারাদেশ

‘মে দিবস দিয়ে কী হবে’

জেলা প্রতিনিধি

০১ মে ২০২৩, ০৭:৩৭ এএম

‘মে দিবস আসুক আর যে দিবসই আসুক, শ্রমিকদের কথা কেউ ভাবে না। সারাদিন না খেয়ে থাকলেও কেউ একবার খোঁজ নেবে না। তাই মে দিবস আসুক আর যাক, এসব নিয়ে ভাবি না। এসব দিবস দিয়ে কী হবে, আমাদের তো ১০ টাকাও লাভ হবে না।’

কথাগুলো বলছিলেন বজলু রহমান। ৪-৫ বছর ধরে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে কুলি হিসেবে কাজ করছেন তিনি। রাজশাহীর বিনোদপুর ডাশমারি এলাকার বাসিন্দা বজলু রহমান। দিনভর অন্যের জিনিস বহন করে যা আয় হয় তাই দিয়ে চলে দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ তার সংসার।

rajshahi

বজলু রহমান ঢাকা মেইলকে জানান, এ কাজের বাইরে আর কিছু করার তেমন সুযোগ নেই। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিক থেকে ট্রেন আসা শুরু হয়। ট্রেন আসলেই কাজ শুরু। এই কর্মযজ্ঞ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আবার রাত ৯টার দিকে চাপ বাড়ে, চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

আয়-রোজগারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকার কোনো ঠিক নেই। যার যত বেশি ব্যাগ-লাগেজ তার থেকে তত বেশি টাকা পাওয়া যায়। একজনের কাছে থেকে ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। অনেকে খুশি হয়ে কিছু বেশিও দেয়।

তিনি আরও বলেন, সারাদিনে ৩০০ টাকা থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা, সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। এই দিয়ে তো সংসার চলে না। জিনিসপত্রের যে দাম, একদিকে কিনলে আরেক দিকে কেনা যায় না। তবুও দিন কেটে যায়। যা আয় হয় তাই দিয়েই আল্লাহ দিন পার করে দেন।

rajshahi

বজলু রহমান বলেন, রিজিকের মালিক তো আল্লাহ। এভাবেই দিন পার করছেন, থেমে তো যায়নি। করোনার সময় তো ট্রেন কয়েক মাস বন্ধ ছিল। কই কেউ তো এক কেজি চালও দিলো না। তবুও আল্লাহ দিন পার করে দেন।

এসময় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের আরেক কুলি তৈমুর আলীর সাথেও কথা হয়। তিনিও নগরীর বিনোদপুর ডাশমারি এলাকার বাসিন্দা। ৮-১০ বছর ধরে এ পেশায় রয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, জীবনে এ রকম অনেক মে দিবস আর শ্রমিক দিবস চলে গেছে। সবাই শুধু প্রতিশ্রুতিই দেয়, দিন শেষে ফাঁকা। সারাদিন কাজ করে ৩০০-৪০০ টাকা পাই। তা দিয়েই ডাল-ভাত খাইতে পারছি। আর কি চাইব?

প্রতিনিধি/এইচই