images

সারাদেশ

মাদারীপুরে ভিড় বেড়েছে ফুটপাতে

জেলা প্রতিনিধি

০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:০৮ পিএম

মাদারীপুর ঘটকচর এলাকার রিকশাচালক সলেমান মুন্সি তার আট বছরের ছেলে জাহিদ মুন্সিকে নিয়ে শহরের পুরানবাজার এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। ফুটপাতের ছোট একটি দোকানে প্রবেশ করে ছেলেকে কয়েকটি জামা পরিয়ে দেখানো হলো। এরমধ্যে সাদা রঙের একটি জামা জাহিদের পছন্দ হলো। দোকানির সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ দরদাম করে অবশেষে চারশ টাকার রফা হয়। 

মাদারীপুর পুরানবাজারের বড় মসজিদ মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ফুটপাতে ঈদ উপলক্ষে জামা প্যান্টের দোকান সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ঈদের মার্কেটে ক্রেতা বাড়লেও আগের মতো জমজমাট তেমন নেই। 

ডাসার থেকে মাদারীপুর শহরে স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন কৃষক কুদ্দুস আকন। ফুটপাতের একটি দোকান থেকে পাঁচশো টাকা দিয়ে নিজের জন্য পাঞ্জাবি, বারোশো টাকা দিয়ে স্ত্রীর জন্য একটি বোরকা ও সাতশো পঞ্চাশ টাকা দিয়ে মেয়ের জন্য একটি ফ্রক কিনেছেন। কুদ্দুস আকন বলেন, গত কয়েকবছর ঈদে নিজেদের জন্য তেমন কেনাকাটা করা হয় নাই। যেই হারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তাছে কীভাবে কিনমু বলেন। এই বছর এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার কইরা কেনাকাটা করতে আইছি। ধান উঠলে তার ঋণ পরিশোধ কইরা দিমু।

জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে পুরো মার্কেটেই। এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা ফুটপাতেই। তারা এখান থেকে নিজেদের সাধ্যের মধ্যে পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেন। তাই ফুটপাতের বাজারে ভিড়ও বেশি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের বেচাবিক্রি চলে। 

সরেজমিনে পুরানবাজার এলাকায় প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহ করার সময়ে চোখ পড়লো ফুটপাতের ছোট একটি দোকানে। যথেষ্ট ভীড় ছিলো দোকানটিতে। বিক্রি-বাট্টার বিষয়ে কথা হলো দোকানী মজিবুর কোতোয়ালের সাথে। তিনি বলেন, আমাদের বেশ ভালো বেচাবিক্রি হয়। আমরা নিন্ম আয়ের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী মালপত্র উঠাই। আমাদের এখানেও মান সম্মত প্রোডাক্ট রয়েছে। আমাদের দোকান ভাড়া কিংবা এডভান্স তেমন নেই। তাই স্বল্প লাভেই আপনার মাল ছেড়ে দেই। এতে ক্রেতারাও খুশি। 

ঈদ বাজার ধরার আশায় পুরান বাজার চন্দ্রিমা মার্কেটের ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান ১৫ লাখ টাকার মালামাল উঠিয়েছেন। তবে ক্রেতার তেমন চাপ না থাকায় অনেকটা অলসভাবেই কাটাচ্ছেন তিনি। সাইদুর রহমান বলেন, মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দা যাওয়ায় আমাদের দিন দিন বেচা বিক্রি কমে যাচ্ছে। এর আগে অন্যান্য বছরে ঈদের এই পনোরো রোজায় সময় জিনিসপত্র বিক্রি করতে করতে হাপিয়ে উঠতাম। কিন্তু সেই বেচা বিক্রি এখন আর হয়ে উঠে না। তাছাড়া মার্কেটের ভিতরে দোকানগুলোতে মানসম্মত মালামাল পাওয়া যায় তাই এগুলোর দাম বেশি তাই স্বল্প আয়ের মানুষেরা ফুটপাত থেকেই বেশি কেনাকাটা করেন। 

মাদারীপুর বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম তুষার ভূঁইয়া বলেন, আমাদের এখানে কিছু কিছু দোকানে ভালো বেচাবিক্রি হচ্ছে আবার কিছু দোকানে বেচাবিক্রি কম হচ্ছে। এটা নির্ভর করছে দোকানের প্রোডাক্টের ওপর। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সব কিছুই ভালো যাচ্ছে। আমরা ক্রেতাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।

প্রতিনিধি/এইচই