images

সারাদেশ

এই চেয়ারে বসে কাজ করা নারীর জন্য চ্যালেঞ্জের: মেয়র আঞ্জুমান আরা

জেলা প্রতিনিধি

০৮ মার্চ ২০২৩, ১২:০৬ পিএম

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। লৈঙ্গিক সমতার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। নারীর প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের স্বীকৃতি দানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য উদযাপনের উদ্দেশ্যে নানা আয়োজনে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় দিনটি।

নারী দিবস নিয়ে কথা হয় নড়াইলের প্রথম নারী মেয়র আঞ্জুমান আরার সঙ্গে। তিনি নড়াইল সদর পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র।

ঢাকা মেইল : বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেশে নারীর ক্ষমতা কতদূর এগোলো?

মেয়র: নারী ক্ষমতায়নের কারণে ধন্যবাদ জানাতে চাই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। আজকে যিনি বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী।

জননেত্রী শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেছেন বাংলাদেশের উন্নয়নে বা যে কোনো দেশের উন্নয়নে কোনো গোষ্ঠী যদি পেছনে পড়ে থাকে সে জাতির উন্নয়ন কোনভাবেই সম্ভব না। ক্ষমতায় শুধুমাত্র যদি পুরুষ থাকে, নারীরা যদি পিছিয়ে থাকে তাহলে কিন্তু সেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন কোনভাবে সম্ভব না। তাই তিনি শুরু থেকে নারীর উন্নয়নে জোর দিয়েছেন।

আমি মনে করি যে, এই উপলব্ধি থেকেই শেখ হাসিনা রুট লেভেল থেকে ওপর পর্যন্ত নারীদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের কোঠা রাখা হয়েছে। যেমন, শিক্ষাকতায় ৬০ ভাগ মেয়েদের চাকরির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে নারীরা চাকরি, ব্যবসাসহ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন সব জায়গাতেই কিন্তু কম বেশি মেয়েরা চাকরি করছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও করছে। যেটা আগে একেবারে চিন্তাভাবনার বাইরে ছিল। বর্তমানে বাজার ঘাটে ২০ জন পুরুষ থাকলে একজন হলেও নারী থাকেন। তাই এটা তো অবশ্যই নারীদের এগিয়ে যাওয়া।

তা শুধু এতোটুকুতেই ভালই হবে না, নারীদের শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। শিক্ষিত নারী সমাজ না হলে নারীর যে ক্ষমতা পুরাপুরি সম্ভব না। জননেত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে হয়তো আমরা জন প্রতিনিধিরা যেখানে নির্বাচিত হয়েছি সেখানে শিক্ষিত অশিক্ষিত যাই হোক না কেন মেয়েদের সেই সুযোগ দেওয়া আছে।

মেয়েরা যদি শিক্ষিত হয় তাহলে এই দেশের সমাজের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই তারা তাদের ভালো-মন্দটা বুঝে নিয়ে তারা পথ চলতে পারবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সেই সুযোগ করে দিচ্ছেন। তার জন্যে তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ঢাকা মেইল :ক্ষমতার চেয়ারে বসে নারীর ক্ষমতা আর অক্ষমতা কি বলবেন?

মেয়র: ক্ষমতার চেয়ারে বসে নারীর ক্ষমতা আর অক্ষমতা বিষয়টি জটিল। আমি যখন মেয়র হইনি শিক্ষকতা করতাম। তখন ভাবতাম যদি কখনো মেয়র হই তবে নড়াইল পৌরসভার আমি সার্বিক উন্নয়ন করতে পারব। এই বিশ্বাস নিয়ে নেত্রী শেখ হাসিনার দয়ায় এবং আমার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় আমি মেয়র নির্বাচিত হয়েছি।

চেয়ার তো আলাদা জিনিস। এখানে নারী আর পুরুষ এমন কোনো বিষয় নেই, এটা একটা চ্যালেঞ্জ। জন প্রতিনিধিদের চেয়ার হচ্ছে একটি চ্যালেঞ্জের জায়গা। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এলাকার উন্নয়ন করছি আরও উন্নয়নের চেষ্টা করছি। আমাদের এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে সহযোগিতা করেন। আশা করছি, সামনের দিনে আরও ভালো ভালো কাজ হবে।

ঢাকা মেইল : মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে কিনা?

মেয়র: সমস্যা তো একটু হয়। আমার এই নড়াইলে আমি প্রথম নারী মেয়র। পারিবারিকভাবে একজন রাজনৈতিক পরিবারের মানুষ। তারপরও আমি নারী প্রতিনিধি হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে বলতে চাই, আমি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক ছিলাম, সেই শিক্ষকতা পেশার অভিজ্ঞতা নিয়েই এখানে আমার আসা। আমার দলীয় অভিভাবক ছাড়া পারিবারিক অভিভাবক নাই। কোভিড-১৯ এ ২০২০ এর ১৬ আগস্ট আমার স্বামী মারা যায়। এরপর থেকে আমি একা। দলীয় লোকজন তাদেরকে নিয়েই আমার পথ চলা। এই চেয়ারে বসে কাজ করা নারীদের জন্য খুব কঠিন, খুব চ্যালেঞ্জের। ১৯৭২ সালে পৌরসভা আজ ২০২৩ সাল এর আগে দীর্ঘ সময় পুরুষ ছেলেরা চেয়ারম্যান বা মেয়র ছিলেন। একটু অসুবিধা তো হয় তবে খুব বেশি না।

টিবি