images

সারাদেশ

৪৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২২টিতেই নেই শহীদ মিনার

জেলা প্রতিনিধি

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৩:২৪ পিএম

ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পরও বান্দরবানের বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার। ফলে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানানোর সুযোগটুকু পাচ্ছে না। যদিও কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কলাগাছ বা কাঠ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয়। কোথাও কোথাও শুধু মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে শহীদদের স্মরণ করা হয়।

কিছু শিক্ষার্থী উপজেলা শহরের শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেও অনেকের পক্ষে তা হয়ে ওঠে না। ফলে ভাষার লড়াইয়ের পটভূমি ও ভাষা দিবসের মর্যাদা সম্পর্কে জানার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর ইচ্ছে অপূর্ণ থেকে যায় শিক্ষার্থীদের।

বান্দরবান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কার্যালয়ের তথ্য মতে, জেলায় ৪৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী। এরমধ্যে মাত্র ১৩টি বিদ্যালয়ে রয়েছে শহীদ মিনার। বাকি ৪২২টি নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার।

বান্দরবানের সদরস্থ আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী অর্পা মুখার্জি বলে, আমরা বইয়ে শহীদ মিনার দেখেছি। কিন্তু আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় কখনো শহীদ মিনারে ফুল দিতে পারিনি।

খামতাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী পাহ্লা খিয়াং বলেন, রোয়াংছড়িতে একটি শহীদ মিনার আছে। কিন্তু সেটি অনেক দূরে। এই স্কুলে কোনো শহীদ মিনার নাই, যার কারণে ২১ ফেব্রুয়ারি বা ১৬ ডিসেম্বরে শহীদ মিনারে ফুল দিতে পারে না ছাত্রছাত্রীরা।

বান্দরবান সদরস্থ বান্দরবান সরকারি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহেদুল আলম জানান, দেশের ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য প্রতিটি স্কুলে শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পৌর এলাকার পাশে যেসব স্কুল রয়েছে জাতীয় দিবস পালনে তাদের সমস্যা না থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলোতে এ দিবস পালনে কিছুটা সমস্যা দেখা যায়।

বালাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাব উদ্দিন জানান, তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকলেও শহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থাকায় জাতীয় দিবস পালনে তেমন সমস্যা হয় না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলোতে কিছুটা সমস্যা হয়। তবে প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা উচিৎ।

এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম জানান, অধিকাংশ স্কুলে শহীদ মিনার না থাকলেও বিশেষ জাতীয় দিবসে স্কুলগুলো খোলা থাকে এবং সব স্কুলে জাতীয় দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়।

তিনি বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই সেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ পেলে শিগগিরই বান্দরবানের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি।

প্রতিনিধি/এজে